বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (ডিআই) জন্য সরকারি তহবিল থেকে ২৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং যুক্তরাজ্যের অধুনালুপ্ত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ডিএফআইডি) অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর শক্তিশালীকরণের (স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ–এসপিএল) প্রকল্পে ধাপে ধাপে অর্থ ছাড় করা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি অনুদান ও সহায়তা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হাইয়ারগভ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

হাইয়ারগভের ওই পরিসংখ্যানের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সূত্র যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সাহায্য সংস্থা (এনজিও) ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে অর্থ বরাদ্দ ও ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমে ২ বছর আর সর্বশেষ ১ বছর ৭ মাস বাড়ানো হলেও ডিএফআইডি অর্থায়নের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে। তবে বাংলাদেশে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরাসরি ব্যবস্থাপনায় যুক্ত ছিল ইউএসএআইডি।

কূটনৈতিক একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, বাংলাদেশে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল বাস্তবায়নে যৌথভাবে অর্থায়ন করেছিল ইউএসএআইডি ও ডিএফআইডি। পাঁচ বছর মেয়াদি ওই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য এ দুটি সংস্থা নিজেদের মধ্যে চুক্তি করেছিল। প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমে ২ বছর আর সর্বশেষ ১ বছর ৭ মাস বাড়ানো হলেও ডিএফআইডি অর্থায়নের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসে। তবে বাংলাদেশে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরাসরি ব্যবস্থাপনায় যুক্ত ছিল ইউএসএআইডি।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রকল্পের অর্থায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কে সেটা খরচ করেছে, আমার কাছে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। পত্রিকায় দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানকে খরচের জন্য এই অর্থ দেওয়া হয়েছে। এনজিও–বিষয়ক ব্যুরো বলেছে, এমন কোনো এন্ট্রি তাদের নেই। আপাতত তাদের কথাই আমাদের মেনে নিতে হবে। তারপরও যদি কোনো তথ্য বের হয়, তাহলে আমরা সেটা দেখব।’

প্রসঙ্গত, ১৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগ (ডিওজিই) তাদের ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছিল, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নানা প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া প্রকল্প ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’-এ ২৯ মিলিয়ন (২ কোটি ৯০ লাখ) ডলার অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে। আর গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অর্থায়ন বাতিলের বিষয়টি আবার উল্লেখ করেন।

তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে প্রকল্পের যে অর্থায়ন বাতিলের কথা বলছেন, সেটির শুরুই হয়েছিল ২০১৭ সালে। তিনি তখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। প্রকল্পটি যেহেতু মার্কিন করদাতাদের অর্থে পরিচালিত, তাই এর অর্থায়নবিষয়ক তথ্যগুলোও জনসমক্ষে প্রকাশিত। এই তথ্য কোনো গোপন দলিল নয়। তা ছাড়া বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোনো দেশীয় বেসরকারি সাহায্য সংস্থার জন্য উন্নয়ন সহায়তা বা অনুদান আসেনি। ফলে তা এনজিও–বিষয়ক ব্যুরোর মাধ্যমে ছাড়ের সুযোগ নেই।

কাকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কে সেটা খরচ করেছে, আমার কাছে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। পত্রিকায় দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানকে খরচের জন্য এই অর্থ দেওয়া হয়েছে। এনজিও–বিষয়ক ব্যুরো বলেছে, এমন কোনো এন্ট্রি তাদের নেই। আপাতত তাদের কথাই আমাদের মেনে নিতে হবে। তারপরও যদি কোনো তথ্য বের হয়, তাহলে আমরা সেটা দেখব।পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

হাইয়ারগভের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ডিআইয়ের প্রকল্প শুরুর পর থেকে ২০২২ থেকে ২০২৫ সালে শেষ হওয়া বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২২ সালে শেষ হওয়া প্রকল্পের জন্য ১৬ দফায় প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল। আর ২০২৪ সালে শেষ হবে, এমন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

হাইয়ারগভের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি সইয়ের পর এসপিএল প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয় মার্চে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মাধ্যমে ২৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার জন্য চুক্তি হয়েছিল। ইউএসএআইডির বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ৮ বছর ৭ মাস নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়ার কথা।

প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে এসপিএল প্রকল্পটি কী, সে সম্পর্কে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করার পাশাপাশি দলের সক্ষমতা তৈরি এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের জন্য কাজ করবে। এই প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ ও বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারী, যুবক এবং তৃণমূল কর্মীদের যুক্ততার স্বার্থে বাংলাদেশের সাতটি বিভাগে দপ্তর পরিচালনা করে।

এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র কাঠামোর উন্নয়ন, আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ দান। এই প্রকল্পে রাজনৈতিক সহিংসতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহিংসতার ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে এর শান্তিপূর্ণ বিকল্পের প্রচারে রাজনৈতিক দল, তৃণমূল কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সম্পৃক্ত করে। প্রকল্পে অংশীদার হিসেবে এশিয়া ফাউন্ডেশন সহায়তা করবে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে।

ওই প্রকল্পের অন্যতম কর্মসূচি হিসেবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের ৪০টি জেলায় ‘শান্তিতে বিজয়’ শীর্ষক প্রচার কর্মসূচি চালিয়েছিল।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মাধ্যমে ২৯ দশমিক ৯০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার জন্য চুক্তি হয়েছিল। ইউএসএআইডির বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ৮ বছর ৭ মাস নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়ার কথা।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের একটি জরিপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল। ওই বছরের অক্টোবরে ইন হাউস কম্পিউটার অ্যাসিসট্যান্স টেলিফোন সার্ভে সিস্টেমের মাধ্যমে এক সপ্তাহে প্রায় দেড় হাজার মানুষের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। জরিপে বলা হয়েছিল, এখন (জরিপ চলাকালে) ভোট হলে ৩৮ শতাংশ মানুষ ভোট দেবে আওয়ামী লীগকে। আর ৫ শতাংশ ভোট দেবে বিএনপিকে। যদিও জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৫ শতাংশ ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো দলেরই নাম নেয়নি।

ওই জরিপ প্রকাশের ছয় মাস আগে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং তখনকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গ্লেন কোয়েনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছিল। বাংলাদেশ সফরের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় গ্লেন কোয়েন আওয়ামী লীগের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) কাজের প্রশংসা করেন।

জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ইউএসএআইডি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো সংস্থার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে হলে সেই সংগঠন বা সংস্থার যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধন প্রয়োজন। এই সহায়তা সরাসরি বাইরের কারও কাছে যাওয়ার কথা নয়। সহায়তার ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এর পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার ক্ষেত্রে নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটা কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও এ–সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করতে হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষা করে কোনো অনিয়ম পেলে আর্থিক সহায়তা ফেরত দেওয়ার নজিরও রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে বাংলাদেশে নাম শোনেনি, এমন প্রতিষ্ঠানকে ২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রসঙ্গ টেনেছেন, সেটার বাস্তবসম্মত কোনো ভিত্তি নেই। আর ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রেই নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠান।

ইউএসএআইডি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো সংস্থার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে হলে সেই সংগঠন বা সংস্থার যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধন প্রয়োজন। এই সহায়তা সরাসরি বাইরের কারও কাছে যাওয়ার কথা নয়।যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ প রকল প র ম য় দ র জন ত ক প বছর ৭ ম স শ ষ হওয় প রসঙ গ ব ষয়ক ব র জন য অন য য় হয় ছ ল ন বন ধ র অন য সরক র এনজ ও প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ