পুনরায় চালু হচ্ছে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’
Published: 25th, February 2025 GMT
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ২১ নম্বর রুট অর্থাৎ গাবতলী থেকে চাষাড়া পর্যন্ত ৩৫টি এসি বাস দিয়ে গ্রিন ক্লাস্টারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে বোরাক পরিবহন।
বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্প পরিচালক ধ্রুব আলম বলেন, “আগামী এক মাসের মধ্যে আরো ১৫টি বাস যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই রুটে বাসের প্রতি কিলোমিটার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা। ন্যূনতম ভাড়া ধরা হয়েছে ২০ টাকা। ঈদের পর আরো দুটি রুট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
সুনামগঞ্জে যাত্রীবাহী দু’ বাসের সংঘর্ষ, আহত ২০
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনের সামনে থেকে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
ধ্রুব আলম বলেন, “এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সড়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিটিসিএ, ডিএমপি, বিআরটিএ, বিআরটিসি ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।”
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকায় ৯টি ভিন্ন রঙের বাস চালুর কথা থাকলেও শুরুতে চালু হচ্ছে গ্রিন ক্লাস্টার। এই ক্লাস্টারের সংশোধিত রুট নম্বর ২১, যা আগে রেড ক্লাস্টারের ১১ নম্বর রুটের সঙ্গে ৯০ শতাংশ মিল ছিল। এই রুটের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১ কিলোমিটার।
ডিটিসিএ জানায়, বর্তমানে এই রুটে ৭০টির বেশি বাস চললেও, রেশনালাইজেশন পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসের চাহিদা ৫০টি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী তা কমবেশি করা হতে পারে।
গ্রিন ক্লাস্টারের রুটের সম্ভাব্য স্টপেজগুলো হলো- গাবতলী, টেকনিক্যাল, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট, আসাদগেট, ধানমন্ডি ২৭, কলাবাগান, ধানমন্ডি ৪, সাইন্সল্যাব, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান, হানিফ ফ্লাইওভার, কাজলা, সাইন বোর্ড, জালকুরি, শিবু মার্কেট এবং চাষাড়া।
নতুন এই বাস সার্ভিস ই-টিকিটের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। যেখানে যাত্রীরা নির্ধারিত স্টপেজ থেকে টিকিট কেটে বাসে উঠতে পারবেন। নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়া অন্য কোথাও বাস থামবে না এবং যাত্রী ওঠা-নামা করতে পারবে না। বাসের অভ্যন্তরে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙানো থাকবে।
ঢাকা/হাসান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।