স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে চট্টগ্রামে চলছে গণ-অনশন
Published: 25th, February 2025 GMT
সারা দেশে খুন, হত্যা, ধর্ষণ ও আওয়ামী লীগের বিচার কার্যকর এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগের দাবিতে চট্টগ্রামে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘অ্যান্টি রেপ ইউনিটি, চট্টগ্রাম’–এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় জামালখান রোডের একাংশ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চলছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার ছড়িয়ে সড়কের ওপর বসে আছেন কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী। তাঁদের সঙ্গে পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন আরও ১০ জন শিক্ষার্থী। এ সময় তাঁরা ধর্ষণের প্রতিবাদে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এ ছাড়া নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এতে বক্তব্য দেন অ্যান্টি রেপ ইউনিটির প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইসতিয়াক, নাহিয়ান আবরার, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক, তানিয়া আক্তার, সাইফুল ইসলাম, শরাফত হোসেন চৌধুরী, প্রত্যয় বড়ুয়া, রাকিব আল ইসলাম ও আহসানুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া বক্তব্য দেন সাকিরা ইসলাম, জান্নাতুল মাওয়াসহ অন্য নারী শিক্ষার্থীরা।
বক্তারা বলেন, দেশে অপরাধ বেড়েছে। বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তাঝুঁকি বেড়েছে। অথচ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। সন্তোষজনক হলে কেন নারীরা ঘর থেকে বের হতে নিরাপদ বোধ করছেন না? কেন তাঁদের পরিবার আতঙ্কে?’
বক্তারা আরও বলেন, এই পরিস্থিতির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়ী। সড়কে যে ভোগান্তি হচ্ছে, সেটির জন্যও তিনি দায়ী। তাঁকে ব্যর্থতায় দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। পরে কর্মসূচি থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেন নেতারা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির ফলে জামালখানসহ আশপাশের সড়কে যানজট দেখা গেছে। সন্ধ্যায় অফিস ছুটি হওয়ার যানজট তীব্র হয়। ফলে নগরের বাকি এলাকাগুলোতেও এর প্রভাব পড়ে। তবে বিকল্প সড়ক থাকায় যানজট তীব্র হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।