ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 26th, February 2025 GMT
সারা দেশে ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল ও মানববন্ধন করেছে কুমিল্লার শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে করা এই বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ার আগেই ধর্ষকদের ফাঁসি নিশ্চিত করুন’।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নেই’ বলে স্লোগান দেন। সরকারের কাছে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
কর্মসূচির শুরুতে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
হল ছাড়ছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা
হল না ছাড়ার ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়া, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান প্রশাসনের প্রতি।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আব্দুল মতিন খসরু কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর ফাহিমা আক্তার বলেন, “আমরা চাই একটি নিরাপদ বাংলাদেশ, যেখানে প্রত্যেকটি মেয়ে নিরাপদে বাঁচতে পারবে।”
কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর নাইমা ইসলাম বলেন, “আজকে আমাদের বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। যা মেনে নেওয়া যায় না। যেখানে সেখানে নারীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”
রূপসী বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়া তাসনীম বলেন, “আমাদের এই শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ঘটছে প্রতিনিয়ত। আমরা ধর্ষকদের ফাঁসি চাই। তাদেরকে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একটি দেশের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ। আমাদের সরকার সেই জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। জনগণের নিরাপত্তা না থাকলে আমরা ঘর থেকে বের হব কীভাবে?”
তিনি আরো বলেন, “২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদেরকে বলা হয়েছিল, দেশে আর কোনো চাঁদাবাজি-রাহাজানি হবে না। এখন প্রতিনিয়তই সেটা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে প্রতিটি ঘটনার বিচার চাই।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ২২ জুন পাসের আগে বাজেটে যেসব ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
শনিবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমরা চাই ২২ তারিখের আগে বাজেটে যেসব ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন করা হোক। আমাদের এখন যেসব সংস্কার কমিটিগুলো রয়েছে তারা যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো অল্প করেও যদি বাস্তবায়ন করা হতো, তাহলেও বাজেটে কিছুটা নতুনত্ব আসতো। সংস্কার কমিশনগুলো কি স্রেফ অলঙ্কার হিসেবে রয়েছে নাকি, আমার জানা নেই। আমি চাই, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হোক। এবারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে যে সুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। এটা যদিও বর্তমান সরকারের দোষ না।এটার জন্য আগের সরকারই দায়ী।”
আরো পড়ুন:
নির্দেশনামূলক বাজেট দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ: এবি পার্টি
প্রস্তাবিত বাজেট নব্য ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন: জিএম কাদের
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “সরকার মেগা প্রকল্প থেকে বের হতে চায়, এটা তাদের প্রত্যাশা। কিন্তু যেসব মেগা প্রকল্প এখন চলমান রয়েছে, সেগুলোরও একটি পর্যালোচনা করতে হবে। উন্নয়ন নাম দিয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বিলাসী ও জনগণের জন্য বিপজ্জনক। যেমন-রূপপুর, মাতারবাড়ি, রামপাল, এসব প্রকল্প থেকে সরকারের বের হয়ে আসার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। এখন থেকে বের হওয়ার জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিতে পারতো, তা হলো জাতীয় সক্ষমতার উন্নয়নের বিকাশ ঘটানো। আর এই বিকাশ ঘটানো হলে অনেক কম দামে আমরা গ্যাস পাব, বিদ্যুৎ খাতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি রয়েছে তা আর দিতে হবে না। পরিবেশ বিনাশী কোনো প্রকল্পেও যেতে হবে না সরকারের।”
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “তবে দুঃখজনক যে, বর্তমান সরকার যে বাজেট উপস্থাপন করেছে, তাতে এই ধরনের পরিকল্পনা নেই। বাজেটে আগের ধারাবাহিকতাই দেখা যাচ্ছে, ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন শুধু শিরোনামে দেখা যায়, বাস্তবতায় তা হলো জনগণের জীবন বিপণ্নকারী।”
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন লেখক কল্লোল মোস্তফা, গবেষক মাহা মির্জা প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ