সারা দেশে ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল ও মানববন্ধন করেছে কুমিল্লার শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে করা এই বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘ধর্ষণের সংখ্যা বাড়ার আগেই ধর্ষকদের ফাঁসি নিশ্চিত করুন’।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নেই’ বলে স্লোগান দেন। সরকারের কাছে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।

কর্মসূচির শুরুতে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

হল ছাড়ছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা

হল না ছাড়ার ঘোষণা কুয়েট শিক্ষার্থীদের

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়া, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান প্রশাসনের প্রতি।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আব্দুল মতিন খসরু কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর ফাহিমা আক্তার বলেন, “আমরা চাই একটি নিরাপদ বাংলাদেশ, যেখানে প্রত্যেকটি মেয়ে নিরাপদে বাঁচতে পারবে।”

কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীর নাইমা ইসলাম বলেন, “আজকে আমাদের বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। যা মেনে নেওয়া যায় না। যেখানে সেখানে নারীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”  

রূপসী বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়া তাসনীম বলেন, “আমাদের এই শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ঘটছে প্রতিনিয়ত। আমরা ধর্ষকদের ফাঁসি চাই। তাদেরকে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একটি দেশের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ। আমাদের সরকার সেই জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। জনগণের নিরাপত্তা না থাকলে আমরা ঘর থেকে বের হব কীভাবে?” 

তিনি আরো বলেন, “২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদেরকে বলা হয়েছিল, দেশে আর কোনো চাঁদাবাজি-রাহাজানি হবে না। এখন প্রতিনিয়তই সেটা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে প্রতিটি ঘটনার বিচার চাই।”  

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’