মধ্যরাতের মধ্যে ইউএসএআইডির অর্থ ছাড়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে দেওয়া সময়সীমা স্থগিত
Published: 27th, February 2025 GMT
স্থগিত রাখা ২০০ কোটি ডলারের বিদেশি সহায়তার অর্থ ছাড়ের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন আদালত। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতের মধ্যে সহায়তা কার্যক্রম আবারও চালু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস সে আদেশ স্থগিত করেছেন।
বিচারপতি রবার্টসের আদেশের মধ্য দিয়ে মামলার ভেতরের নানা প্রশ্নের মীমাংসা করা হয়নি। বরং এ মামলায় লিখিত যুক্তিতর্কগুলো পর্যালোচনা করার জন্য আদালতকে কয়েক দিন সময় দিতে ‘প্রশাসনিক স্থগিতাদেশ’ নামে পরিচিত একটি আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির ফেডারেল আপিল আদালতের জরুরি মামলাগুলো সামলে থাকেন রবার্টস।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আগামী শুক্রবারের মধ্যে তাঁদের বক্তব্য জানাতে বলেছেন মার্কিন প্রধান বিচারপতি।
বিদেশি সহায়তা ছাড়ে বুধবার মধ্যরাতের সময়সীমা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয় ট্রাম্প প্রশাসন। সিদ্ধান্ত স্থগিতের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তাঁর প্রশাসনকে উচ্চ আদালতে ছুটতে হলো।
বুধবারের এ আবেদনটি ছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) থেকে কোটি কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ রাখাসংক্রান্ত। ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ওই সহায়তা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ কমানোর পাশাপাশি এ সহায়তাকে নিজের পররাষ্ট্রনীতিগত অবস্থানের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে চাইছিলেন ট্রাম্প।
শুরুতে বাইডেনের নিয়োগ করা ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ আমির আলী মামলাটি পরিচালনা করেন। মামলার বাদীরা দাবি করেন, ট্রাম্প প্রশাসন পর্যাপ্ত পরিমাণে তহবিল পুনরুদ্ধার করেনি। বিচারপতি আলী এ সময় বুধবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে সব বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
তবে বুধবার ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে বলেছে, এ সময়সীমা মানাটা তাদের জন্য অসম্ভব। আদালতকে তারা বলেছে, বিচারকের অনুরোধ পূরণ করতে তাদের ‘কয়েক সপ্তাহ’ সময় লাগবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব চ রপত সময়স ম র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে হামলা: ট্রাম্প ৬০ দিনের সময়সীমার কথা বলছেন, সেটি কী?
ইরানকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিনই দেশটিতে ভয়াবহ হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল। আজ শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই ওই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি চুক্তিতে রাজি হতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিতে পৌঁছাতে ওয়াশিংটন–তেহরান আলোচনা সফল করতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইরান চুক্তি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ১২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। সেদিন থেকেই এই ৬০ দিনের সময়সীমা গণনা শুরু হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ জুন ইসরায়েল হামলা চালাল ইরানের অন্তত ৮টি শহরে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ সিএনএনের সাংবাদিক ডানা বাসকে বলেন, ‘আমার কথা শোনা উচিত ছিল ইরানের। যখন আমি বলেছিলাম—আপনি জানেন, আমি ওদের ৬০ দিনের এক সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম, আপনি জানেন কি না, জানি না, কিন্তু আমি ওদের ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলাম, আর আজ ৬১তম দিন।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উদ্দেশে পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প ইরানকে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
বছরের শুরুর দিকে ফক্সনিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিঠির প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, ইরান আলোচনায় আসবে—আমি তাদের চিঠি লিখে জানিয়েছি, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, আমাদের যদি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে সেটা ইরানের জন্য ভয়াবহ হবে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, সেটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।’
ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং আলোচনায় জড়িত ব্যক্তিরা জানতেন যে সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন, ৬০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও আলোচনা চলবে। কিন্তু এখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর হামলা চালানোর পর এই আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে—যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।