মমতার হুঁশিয়ারি: ‘বহিরাগতদের’ বাংলা দখল করতে দেওয়া হবে না
Published: 27th, February 2025 GMT
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে বহিরাগতদের ভোটার করার পাঁয়তারা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এক জনসভায় নেতা-কর্মীদের প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ আহ্বান জানান। অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আয়ু আর মাত্র দুই থেকে তিন বছর বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতা।
কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় মমতা বলেন, ভোটের আগে ভোটার তালিকা পরিষ্কার করতে হবে। ওরা ভোটার কারসাজি করে তালিকা বহিরাগতদের ঢোকাতে চায়। হরিয়ানা-গুজরাটের মানুষের নাম ঢোকানোর পাঁয়তারা চলছে। সজাগ থাকুন।
মমতার শঙ্কা, একটি সংস্থা বসিয়ে অনলাইনে ভোটার তালিকা নিয়ে কারসাজি করতে পারে বিজেপি। তাই সব কর্মকর্তার (অপারেটর) প্রতি লক্ষ্য রাখুন। হাতেনাতে ধরবেন।
অন্যদিকে বিজেপির আয়ু মাত্র দুই থেকে তিন বছর উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৭ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে বিজেপি শেষ হয়ে যাবে। মানুষ আর বিজেপিকে চাইবে না।
মমতা বলেন, কেবল ভোট এলেই বিজেপি তৃণমূলের কাকে কাকে চোর বলবে, তা মনে পড়ে? কারণ, ওদের টাকার জোর, সংস্থার জোর। ভোট যত এগিয়ে আসতে থাকবে, সংস্থার তৎপরতা তত বাড়তে থাকবে।
সভায় মমতার ভাইপো ও সংসদ সদস্য এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ২০২৬ সালের নির্বাচনে আমাদের আরও বেশি আসনে জয়লাভ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। ২০২১ সালের নির্বাচনে আমরা ২১৪টি আসনে জিতেছিলাম। এবার আরও বেশি আসনে জিততে হবে।
বিজেপির চক্রব্যূহ ভাঙার আহ্বান জানিয়ে অভিষেক বলেন, বিজেপি তো গত বছরের লোকসভা নির্বাচনে ১৮ থেকে কমে ১২টি আসনে জিতেছিল। এবার আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনেও ওদের ভরাডুবি হবে। ওরা বাংলাকে কলুষিত করার চক্রান্তে মেতেছে। বাইরে প্রচার করছে অভিষেক বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, আবার কখনো বলছে অভিষেক নতুন দল গড়ছেন? এসব প্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।
নিজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছেন জানিয়ে তৃণমূলের এই সংসদ সদস্য বলেন, বেইমান মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীকে আমি চিহ্নিত করে দল থেকে তাড়িয়েছি। এখন যারা বেইমানি করবে, তাদেরও শনাক্ত করে দল থেকে তাড়ানো হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন দ য প ধ য য় ম খ যমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা
জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।
হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
আবেদনে যোগ্যতার শর্ত
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—
—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।
—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।
—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।
বয়সসীমা—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।
—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।
—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।
—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।
বৃত্তির সুবিধা
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:
১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।
২। মাসিক ভাতা।
—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।
—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।
—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।
—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।
—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।
—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।
—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।