Risingbd:
2025-06-16@02:52:23 GMT

নোয়াখালীর ৪ গ্রামে রোজা শুরু

Published: 1st, March 2025 GMT

নোয়াখালীর ৪ গ্রামে রোজা শুরু

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রথম তারাবির নামাজ আদায় ও সাহরি খেয়ে পবিত্র রমজানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার চার গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামগুলোতে প্রায় শত বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা-ঈদ পালন হচ্ছে। 

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে তারাবি ও সাহরি খান গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। আজ শনিবার (১ মার্চ) থেকে প্রথম রোজা রেখেছেন তারা।

গ্রামগুলো হলো- নোয়াখালী সদর উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর ও হরিণারায়নপুর, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রাম।

আরো পড়ুন:

চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে রোজা শুরু

ছোলার দাম কমেছে কেজিতে ২৫ টাকা

জানা গেছে, বড় পীর আবু মুহম্মদ মহিউদ্দীন সৈয়দ আবদুল কাদির জিলানী (রহ.

) এর মতাদর্শে তৈরি হয় কাদেরিয়া তরিকা। কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিণারায়নপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছর একদিন আগেই রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন। 

কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী নোয়াখালী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আবদুল আজিম বলেন, ‍“আমার বাড়িতে দরবার শরীফ। প্রতি বছর আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা শুরু করি। ঈদ একদিন আগেই পালন করি  হোক সেটা ঈদুল ফিতর কিংবা ঈদুল আজহা। আমরা সবাই আনন্দ করি এবং একে অন্যের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি।”

হাসেম নামে অপর একজন বলেন, “ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত প্রথম চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজ রাখি। আমরা বিশ্বের যেকোনো জায়গায় চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করি। আমরা পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার খবর পেয়েছি। আমরা নিজেরাও খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হয়েছি। তারাবির নামাজ আদায় করেছি। ভোররাতে সাহরি খেয়ে রোজা শুরু করেছি।”

রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফে ঈদুল ফিতরের জামায়াতের ইমামতি করেন রহিমিয়া রশিদিয়া আল কাদেরিয়া দরবার শরীফ চট্টগ্রামের খাদেম আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, “পূর্বপুরুষদের থেকে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদ উদযাপন করি। রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফে এটা উদযাপনের ইতিহাস প্রায় ১০০ বছরের বেশি হবে।” 

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাক

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান হবে আশা করা যায়। নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়ে দুই পক্ষই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে যে ২০২৬ সালের রোজার আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। 

সাম্প্রতিক কালে নানা বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বের বিরোধ লক্ষ করা যাচ্ছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যু সেই বিরোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ বৈঠকে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করে।

কিন্তু ঈদুল আজহার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার ব্যাপারে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এর আগে বিএনপির নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে। 

এমনই একটি পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সময় লন্ডনে তাঁর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বৈঠকের ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়টি সামনে এলেও দুই পক্ষের আলোচনা কেবল এর মধ্যে সীমিত ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সংস্কারের ধারাবাহিকতার ওপরও জোর দেন তঁারা। 

বৈঠকের ফলাফলকে প্রায় সব দলই স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণার ধরন নিয়ে আপত্তি জানালেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সরাসরি বিরোধিতা কেউ করেনি। আমরাও মনে করি, কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ দেখা দিলে আলোচনার মাধ্যমেই তা সমাধান করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ যারা সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে। লন্ডন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার ও বিচারকাজ দৃশ্যমান করার ওপর জোর দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরাগমন না ঘটে, সে জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি ত্বরান্বিত করা জরুরি। আবার অপরাধ করে যাতে কেউ পার না পায়, সে জন্য জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচারও অপরিহার্য। কিন্তু এই দুটি বিষয়কে কোনোভাবে নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা সমীচীন হবে না।

যেসব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে নির্বাচন ও সংবিধানের বিষয়টি জড়িত নয়, সেগুলো সরকার নির্বাহী আদেশেও বাস্তবায়ন করা যায়। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে তেমন বাধা আসার কথা নয়। তবে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার অর্থ এই নয় যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করাই বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতা না থাকলে সরকার একা কাজটি করতে পারবে না। 

ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সংঘাতের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে না চললে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। আমরা আশা করি, দিন-তারিখের বিষয়ে সমঝোতার পর নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিতে মত ও পথের পার্থক্য থাকবে; তাই বলে একে অপরকে ‘শত্রুজ্ঞান’ করার পুরোনো সংস্কৃতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ