সাভারের আশুলিয়ায় ম্যাগপাই নিটওয়্যার লিমিটেড নামে একটি বন্ধ পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা প্রহরীদের মারধর করে বেঁধে রেখে মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতরা। নগদ টাকা এবং প্রায় ১০ কোটি টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী লুট হয়েছে বলে দাবি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রাতে ইয়ারপুর ইউনিয়নের ঘোষবাগ এলাকায় ম্যাগপাই গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি হয়।
 
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পোশাক কারখানাটির সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ওই রাতে ১৫ থেকে ২০ ডাকাত দেশি অস্ত্র নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করে। তারা প্রহরীদের মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে এবং কারখানার ভেতরে থাকা মূল্যবান মালপত্র লুট করে পালিয়ে যায়।

কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের সুপারভাইজার রাজীব শনিবার জানান, ডাকাতির খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, কারখানাটি গত বছর ৫ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ লাইনও বিচ্ছিন্ন ছিল। ডাকাতরা কারখানায় প্রবেশ করে দুটি কম্পিউটার, আইপিএসের ব্যাটারি, পরিত্যক্ত এয়ারকন্ডিশনার, বৈদ্যুতিক মোটর ও জেনারেটরের তার লুট করে নিয়ে যায়। 

ম্যাগপাই নিটওয়্যার লিমিটেডের এজিএম কায়সার আলী খান বলেন, কারখানাটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডাকাতরা কারখানায় প্রবেশ করে দারোয়ান ও প্রহরীকে জিম্মি করে ফেলে। পরে তারা ডাকাতি করে রাত ৩টার দিকে চলে যায়। ডাকাতরা একটি মাইক্রোবাস ও দুটি ট্রাকে করে প্রায় ১০ কোটি টাকার মালপত্র নিয়ে গেছে। 

শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ডাকাতির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছি। রাত ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ ডাকাত লুটপাট করেছে। কারখানাটিতে শ্রমিকদের কিছু দেনা-পাওনার ইস্যুও আছে। র্যা ব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এ নিয়ে কাজ করছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত মালপত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ