সিরাজগঞ্জ পৌর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মারা যাওয়া কলেজছাত্র আসিফ হোসাইনের (১৯) লাশ দীর্ঘ সাত মাস পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে লাশটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

নিহত আসিফ সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের একডালা মহল্লার নজরুল ইসলামের ছেলে এবং সিরাজগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সিরাজগঞ্জ শহরের ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মুস্তাকিম হোসেন সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, নিহত আসিফের বাবা নজরুল ইসলাম লাশ পেতে আদালতে আবেদন করেছিলেন। পরে লাশটির ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আসিফের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার শুনানি শেষে আদালত লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে আদেশ দেন। আজ লাশটি পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

নিহত আসিফের মামা শাহীন শেখ বলেন, আসিফ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অন্য ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন। যাওয়ার সময় মাকে বলে যান, তিনি মিছিলে যাচ্ছেন। শহরের চৌরাস্তা মোড় এলাকায় তিনি মিছিলে অংশ নেন এবং অন্য ছাত্ররাও তাঁকে সেখানে দেখেছিলেন। ওই দিন দুপুরের পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাঁর সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন। আত্মীয়স্বজনের বাসাসহ বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এর পরদিন ৫ আগস্ট ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ওই বাড়ির ভেতর থেকে অগ্নিদগ্ধ দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পরে নিহত ব্যক্তির পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ