নেত্রকোনায় বিদ্যুতের সেচসংযোগের দাবিতে কৃষকের মানববন্ধন
Published: 5th, March 2025 GMT
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বোরো চাষে বিদ্যুতের সেচসংযোগের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ‘খারনৈ ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর বৈঠাখালী গ্রামের মাঠে এলাকার কৃষক সমাজ’–এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় ভুক্তভোগী কৃষকেরা দাবি করেন, বিদ্যুতের অভাবে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় জমিতে চাষাবাদ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, বিশ্বনাথপুর বৈঠাখালী গ্রামের কৃষক হুমায়ূন কবীর ২০২০ সালে সেচসংযোগ চালু করেছিলেন। এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষকের প্রায় ২০ একর জমিতে সেচ দেওয়া হতো। গত এপ্রিলে ওই সেচসংযোগের বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৮ হাজার ৬৯৩ টাকা বকেয়া ছিল। তখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরের মাসে টাকা পরিশোধ করা হলেও বিদ্যুৎ–সংযোগ আর দেওয়া হয়নি।
হুমায়ূন কবীর অভিযোগ করেন, কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) তাপস দেবনাথ বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের জন্য তাঁর কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেন। এতে কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম ও ডিজিএমকে বিবাদী করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জবাব দেয়নি। আদালত ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিনের মধ্যে সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন, তবে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি। এজিএম এখন উল্টো শর্ত দিচ্ছেন, মামলা তুলে নিলে সংযোগ দেওয়া হবে।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে তাপস দেবনাথ বলেন, ‘বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের নামে কারও কাছে কোনো টাকা চাওয়া হয়নি। এটা মিথ্যা অভিযোগ। আর বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের জন্য কোনো আবেদনও করা হয়নি।’
স্থানীয় কৃষক রতন মিয়া বলেন, তিনি খালের পানি দিয়ে দুই একর জমিতে ধান আবাদ করেছেন। খালের পানি এখন শুকিয়ে গেছে। ধানখেতে সেচ দিতে পারছেন না। সব কৃষকের খেত হুমকির মুখে পড়েছে। সেচ প্রকল্পে দ্রুত বিদ্যুৎ–সংযোগ না দিলে ফসল রক্ষা করা যাবে না।
নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মাসুম আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। হুমায়ূনকে যেখানে সেচের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, সেখানে স্থাপন করেননি। তবে আদালতের নির্দেশটি আমার জানা নেই। আদালত নির্দেশ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কলম ক ন দ
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা