বাগেরহাটে যুব উন্নয়ন কার্যালয়ে দুদকের অভিযান
Published: 5th, March 2025 GMT
বাগেরহাটে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর জালিয়াতি, বেতন-ভাতা আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে অভিয়ান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ মার্চ ) দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর এলাকায় অবস্থিত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।
দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.
আরো পড়ুন:
পদ্মাসেতু প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ
১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলা
নারায়ণ চন্দ্র ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘‘অভিযানে বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। প্রশিক্ষণার্থীদের দেওয়া ভাতা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছি। অনেক প্রশিক্ষণার্থী জানিয়েছেন, তারা নির্ধারিত ভাতার থেকে কম পেয়েছেন। প্রশিক্ষকদেরও নির্ধারিত ভাতার থেকে কম দেওয়া হয় বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।’’
তিনি জানান, এখানে ড্রাইভিং কোর্স চালুর জন্য যে গাড়ি ব্যবহার করা হয়, সেই গাড়ির অটোমিটার নেই। এক লিটার তেলে দুই কিলোমিটার গাড়ি চালানো হয়েছে বলে লগ বইতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া গাড়ি চালনার লগ বইতে নানা অসঙ্গতি রয়েছে।
তিনি আরো জানান, এসবের পাশাপাশি মেশিন ও মালামাল কেনার ক্ষেত্রেও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন কেনা হয়েছে। যার দাম দেখানো হয়েছে দুই লাখ টাকা। কিন্তু এর দাম এক লাখ টাকা। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
অভিযানে প্রাপ্ত কাগজপত্র ও তথ্য-প্রমাণ পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।
অভিযানের সময় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বাগেরহাটের উপপরিচালক আব্দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।
তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’
প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়