ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের যুক্তরাজ্য সফরকালে তাঁর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের একটি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

আজ বৃহস্পতিবার ভারত এই নিন্দা জানায়। নয়াদিল্লি বলেছে, এভাবে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার অপব্যবহারের নিন্দা জানায় ভারত।

ঘটনার একটি কথিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ছড়িয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতের পতাকার মতো দেখতে তিনরঙা লম্বা এক টুকরো কাপড় দুই হাতে মেলে ধরে চিৎকার করতে করতে একটি গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ান এক ব্যক্তি। তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছে পুলিশ। গাড়িতে জয়শঙ্কর বসা ছিলেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে গাড়ির সামনে থেকে সরিয়ে নেয় পুলিশ।

ঘটনার সময় খালিস্তানপন্থী পতাকা হাতে এক দল মানুষকে চিৎকার করে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে আজ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফরের সময় তাঁর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ভিডিওচিত্র তাঁরা দেখেন। তাঁরা বিচ্ছিন্নতাবাদী ও চরমপন্থীদের এই ছোট দলটির উসকানিমূলক কার্যকলাপের নিন্দা জানান।

রণধীর জয়সোয়াল আরও বলেন, তাঁরা এই ধরনের লোকজনের এভাবে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার অপব্যবহারের নিন্দা জানান। তাঁরা আশা করছেন, এ ধরনের ঘটনায় স্বাগতিক সরকার (যুক্তরাজ্য) তাদের কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতা সম্পূর্ণরূপে পালন করবে।

চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে একদল খালিস্তানপন্থী বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের বাইরে জড়ো হয়েছিল।

এর আগে ২০২৩ সালে লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনে হামলা চালিয়েছিল খালিস্তানপন্থীরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ এপ্রিল থেকে ১৭ জুনের মধ্যে ট্রাম্প–মোদির কোনো কথা হয়নি: জয়শঙ্কর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, তিনিই ভারত–পাকিস্তানের যুদ্ধ থামিয়েছেন। বাণিজ্য চুক্তির কথা বলে দুই দেশকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছিলেন। গতকাল সোমবার ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ প্রসঙ্গে বলেন, ২২ এপ্রিল পেহেলগামের হামলার পর থেকে ১৭ জুনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কোনো ফোনালাপ হয়নি।

পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের বদলায় ভারতের অপারেশন সিঁদুর অভিযান চার দিনের মাথায় বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্রমাগত বলে চলেছেন, তিনিই যুদ্ধবিরতিতে দুই দেশকে রাজি করিয়েছেন। দুই দেশকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করতে গেলে যুদ্ধ থামাতে হবে। এই মধ্যস্থতা নিয়ে ভারতে প্রশ্ন উঠেই চলেছে; কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্তত ২৪ বার এই দাবি করেছেন। অথচ ভারতের প্রধানমন্ত্রী একবারও বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট অসত্য বলছেন। ভারতের বক্তব্য, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাকিস্তানের কাছ থেকে এসেছিল। ভারত তা গ্রহণ করেছে।

গত সোমবার সন্ধ্যায় লোকসভায় অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনায় ভাষণ দেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এই বিতর্ক প্রসঙ্গে বলেন, ২২ এপ্রিল পেহেলগামকাণ্ডের পর সহানুভূতি জানাতে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর পর তিনি ফোন করেন ১৭ জুন। কেন মোদির সঙ্গে কানাডায় তাঁর দেখা হচ্ছে না, তা ব্যাখ্যা করতে। এই দুই তারিখ, অর্থাৎ ২২ এপ্রিল ও ১৭ জুনের মধ্যে একবারও মোদি–ট্রাম্প ফোনালাপ হয়নি। জয়শঙ্কর আরও বলেন, যদ্ধবিরতির সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার কোনো সম্পর্কও নেই।

জয়শঙ্কর বলেন, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা কীভাবে করা হবে, সে বিষয়ে অপারেশন সিঁদুর এক ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ (নিউ নর্মাল) সৃষ্টি করেছে। এই নতুন স্বাভাবিকতার পাঁচটি দিক। এক, সন্ত্রাসবাদীদের আর ঢাল হিসেবে গ্রাহ্য করা হবে না। দুই, সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদী হামলার যোগ্য জবাব সব সময় দেওয়া হবে। চুপ করে বসে থাকার দিন শেষ। তিন, সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলবে না। সন্ত্রাসের আবহে আলোচনায় বসার উদ্দেশ্য একটাই, কী করে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করা হবে। চার, পরমাণু অস্ত্রের ব্ল্যাকমেলের কাছে ভারত মাথা নোয়াবে না। পাঁচ, সন্ত্রাস ও সুপ্রতিবেশীমূলক মনোভাব পাশাপাশি চলবে না। রক্ত ও পানি একসঙ্গে বইতে পারে না। এ পাঁচ বিষয়ে ভারতের মনোভাব সুস্পষ্ট।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। পররাষ্ট্রনীতি সফল বলেই লস্কর–ই–তাইয়েবার ছায়া–সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে (টিআরএফ) যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করেছে। পররাষ্ট্রনীতি সফল বলেই মাত্র তিনটি দেশ (চীন, তুরস্ক, আজারবাইজান) অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করেছে। শত্রুতা ও বিরোধিতার লাল রেখা (রেড লাইন) অতিক্রম করার শাস্তি কী, তা বোঝানোই ছিল অপারেশন সিঁদুরের উদ্দেশ্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ এপ্রিল থেকে ১৭ জুনের মধ্যে ট্রাম্প–মোদির কোনো কথা হয়নি: জয়শঙ্কর