পুলিশের হস্তক্ষেপে খুলেছে সেই রিফুয়েলিং স্টেশন
Published: 6th, March 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মালিককে না পেয়ে কর্মচারীদের মারধরের পর তাদের কাছ থেকে অফিস রুমের চাবি নিয়ে খুলে নগদ পাঁচ লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে কর্মচারীদের মাধ্যমে মালিকের কাছে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে চলে যায়।
পাশাপাশি চাঁদা না দিলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া এবং মালিককে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।
ঘটনাটি গত মাসের ৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর-আজমতপুর-ইটাখোলা আঞ্চলিক সড়কের উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের মৈশাইর গ্রামে এলপিজি অটোগ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রিফুয়েলিং স্টেশন মালিক বাদী হয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি একই গ্রামের রতন খান প্রধান করে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৭/১৮ জনকে অভিযুক্ত করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে মামলার প্রধান আসামি রতন খানকে (৪৯) পুলিশ গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। এর আগে বুধবার (৫ মার্চ) উপজেলার মৈশাইর থেকে কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর কাশেম গ্রেপ্তার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
গ্রেপ্তার রতন খান উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের মৈশাইর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। অন্যদিকে ব্যবসায়ী জামিল ওয়াহেদ মুহিদ ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৈশাইর গ্রামের মৃত মোতাহার হোসেনের ছেলে এবং ওই এলাকার এলপিজি অটোগ্যাস রিফুয়েলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী। তিনি বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন এন্ড কনভারসন ওয়ার্কসপ ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা উত্তর জোনের সাবেক সভাপতি।
ওসি আলাউদ্দিন বলেন, “ঘটনার পর থেকেই আমরা রিফুয়েলিং স্টেশনের মালিককে তার প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে তাগিদ দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তিনি নিরাপত্তাহীনার অজুহাতে তা খোলেননি। অবশেষে গত ৪ মার্চ আমি কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান স্যার, থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর কাশেমকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে এসেছি। আমরা তাদের সকল নিরাপত্তার ব্যাপারে আস্বস্ত করেছি।”
জানা গেছে, গত মাসের ৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। প্রতিষ্ঠান মালিকের ভাষ্য অনুযায়ী চাহিদাকৃত চাঁদার টাকা না দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললে তা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা। এ জন্য নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রায় এক মাস সময় ধরে বন্ধ ছিল।
প্রতিষ্ঠান মালিক ও মামলার বাদী জামিল ওয়াহেদ বলেন, “রিফুয়েলিং স্টেশনটি একটু স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে গ্যাস নিয়ে কাজ। তাছাড়া ঘটনার পর থেকে রতন খান আমাকে এবং আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হুমকি- প্রদান করছিল। ম্যানেজার ভয়ে ছুটির অজুহাতে বাড়ি চলে গেছে। আমিও নিরাপত্তায়হীনতায় ভুগছিলাম প্রতিষ্ঠান খুলতে। কারণ শত্রুতা করে কেউ কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করলে আমি একেবারে পথে বসে যেতাম। থানা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন আমার এখানে এসে প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে গেছে। পাশাপাশি আমার মামলার মূলহোতা রতন খানও গ্রেপ্তার হয়েছে।”
উল্লেখ্য, এর আগে বিষয়টি নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ‘পাঁচ লাখ টাকা লুটে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তালা, আরো ১০ লাখ দাবি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার হয়।
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রতন খ ন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।
গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।
মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।