নারী ও শিশু ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে: সাদা দল
Published: 9th, March 2025 GMT
সম্প্রতি দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তারা বলেছে, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই সমাজে নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা, ছিনতাই, গুম, অ্যাসিড সন্ত্রাস ইত্যাদি বেড়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি দেশজুড়ে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও হেনস্তার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। নারী ও শিশু ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সাদা দল এ কথা বলেছে। সাদা দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছেন আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সালাম।
সাদা দলের বিবৃতিতে বলা হয়, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে যে সম্প্রতি দেশজুড়ে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও হেনস্তার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই সমাজে নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা, ছিনতাই, গুম, অ্যাসিড সন্ত্রাস ইত্যাদি বেড়ে যাচ্ছে। ৫ মার্চ দিবাগত রাতে মাগুরা সদরে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে আট বছরের এক মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মেয়েটি মারাত্মক আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। সে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একই দিন দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক নারী শিক্ষার্থীকে নাজেহাল ও হেনস্তা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৯ মার্চ রাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চার মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার নাম করে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ডেকে নিয়ে কয়েকজন দলবদ্ধ ধর্ষণ করেছেন। তাঁকেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দেশে নারী ধর্ষণ ও সহিংসতা বেড়ে গেছে, তা এসব ঘটনায় প্রমাণিত হয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দেশবাসীর মতো আমরাও গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। মাগুরার আট বছরের মেয়েশিশুর ধর্ষক ও ধর্ষণের সহযোগিতাকারীদের অপরাধ এক ও অভিন্ন। এদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’ বিবৃতিতে দেশে নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণ এবং হত্যা বন্ধের ব্যাপারে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি