আজ বিশ্ব কিডনি দিবস। প্রতি বছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার এই দিবসটি পালিত হয়। কিডনি রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি খুবই জরুরি।
এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘আপনার কিডনি কি সুস্থ? দ্রুত শনাক্ত করুন, কিডনির স্বাস্থ্য সুরক্ষা করুন’
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বিভিন্ন কর্মসূচিতে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা প্রতিকারের পাশাপাশি কিডনি রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানান।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জনগণের জন্য গুণগত মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস ‘বিশ্ব কিডনি দিবস ২০২৫’ উদযাপন কিডনি রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”
কিডনি মানবদেহে সৃষ্ট আবর্জনা নিষ্কাশনে সহায়তা করে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “কিডনি রক্তের ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে এবং লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
কিডনি রোগ একটি নীরব ঘাতক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, ২০৪০ সাল নাগাদ বিশ্বে কিডনি রোগ মানব মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশেও এ রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর ও অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ব্যথানাশক ঔষধের যথেচ্ছ ব্যবহার ও খাদ্যে ভেজালসহ বিভিন্ন কারণ এ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য দায়ী।”
বিবিসি এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়- যদি কিডনি রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে তবে পিঠে ব্যথা হবে। ওপর দিকে নয়, নিচের অংশে। এ ব্যথাকে সাধারণ ব্যথা মনে না করে অবশ্যই গুরুত্ব দিন। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য নির্গত করে। কিন্তু কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে মূত্রনালিতে সমস্যা দেখা দেয়। বারবার মূত্রত্যাগ, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা মূত্রে অতিরিক্ত ফেনা হওয়া কিডনির সমস্যার অন্যতম লক্ষণ। কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই সব সময় ক্লান্তি, দুর্বল অনুভব, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া কিডনির সমস্যার কারণে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্ত পরিশুদ্ধ হয় না। রক্তে বিষাক্ত ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বাড়তে থাকে। যা ত্বকে চুলকানি ও র্যাশ তৈরি করে। গরম আবহাওয়ার মধ্যে শীত অনুভূত হওয়াও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। কিডনি সমস্যায় রক্ত পরিশুদ্ধ হতে পারে না। যার কারণে মুখ, চোখের চারপাশ, পায়ের গোড়ালি হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে ফুসফুসে তরল জমা হবে। ফলে শ্বাসকষ্টও অনুভূত হতে পারে কিডনি রোগীর।
ঢাকা/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ বসট সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫