জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিদ্রোহী’ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিট বাতিল ও অসদাচরণের অভিযোগে গত বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর পর বৃহস্পতিবার শিক্ষকের ‘মানহানির’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই শিক্ষার্থীদের হলের সিট বাতিল ও অসদাচরণের ঘটনায় ‘বিদ্রোহী’ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করা হয়। চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হলের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, অনেক শিক্ষার্থী রেজাল্টের পর উচ্চশিক্ষা বা চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য হলে থাকতে চাইলেও হল প্রশাসন সিট বাতিল করছে। প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। এ ছাড়া বিদ্রোহী হল প্রশাসনের আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের না রেখে বৈষম্যমূলক আচরণে ইফতার বয়কটের ডাক দেন তারা।

এ সময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- প্রাধ্যক্ষের অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাঁর স্থলে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর তিন মাস হলে থাকার সুযোগ দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় আয়োজনে মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। হলের ভাড়া ৫০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে হবে এবং বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই, নিরাপত্তা ও উন্নতমানের খাবার নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, ১৩তম আবর্তন এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ব্যাচ এবং তাদের অনেকের রেজাল্ট হয়নি। শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সিট বাতিল হলে তারা কোথায় গিয়ে উঠবেন?
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর হল ছাড়বে, তাদের সিট বাতিল করা হয়েছে। এটি নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে।
এদিকে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় শিক্ষকের ‘মানহানির’ অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ আন্দোলনে তিন দফা জানান। দাবিগুলো হলো– বিদ্রোহী হলের প্রাধ্যক্ষের সম্মানহানির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিার আওতায় আনতে হবে। তদন্ত ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া সব ধরনের অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করতে হবে। যেসব অনলাইন পেজ ও গ্রুপ মুষ্টিমেয় শিক্ষার্থীকে উস্কে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিক্ষোভকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাকে ইতোমধ্যে কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ দিয়েছে। আপনারাও অভিযোগ দিন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ কর ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের
  • তিন দিনের পর্যটন মেলায় ৪০ কোটি টাকার ব্যবসা
  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার