প্রাধ্যক্ষকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ
Published: 13th, March 2025 GMT
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিদ্রোহী’ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিট বাতিল ও অসদাচরণের অভিযোগে গত বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এর পর বৃহস্পতিবার শিক্ষকের ‘মানহানির’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই শিক্ষার্থীদের হলের সিট বাতিল ও অসদাচরণের ঘটনায় ‘বিদ্রোহী’ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করা হয়। চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হলের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, অনেক শিক্ষার্থী রেজাল্টের পর উচ্চশিক্ষা বা চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য হলে থাকতে চাইলেও হল প্রশাসন সিট বাতিল করছে। প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। এ ছাড়া বিদ্রোহী হল প্রশাসনের আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের না রেখে বৈষম্যমূলক আচরণে ইফতার বয়কটের ডাক দেন তারা।
এ সময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- প্রাধ্যক্ষের অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাঁর স্থলে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর তিন মাস হলে থাকার সুযোগ দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় আয়োজনে মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। হলের ভাড়া ৫০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে হবে এবং বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই, নিরাপত্তা ও উন্নতমানের খাবার নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ১৩তম আবর্তন এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ব্যাচ এবং তাদের অনেকের রেজাল্ট হয়নি। শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সিট বাতিল হলে তারা কোথায় গিয়ে উঠবেন?
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর হল ছাড়বে, তাদের সিট বাতিল করা হয়েছে। এটি নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে।
এদিকে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় শিক্ষকের ‘মানহানির’ অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীরা বিভাগের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ আন্দোলনে তিন দফা জানান। দাবিগুলো হলো– বিদ্রোহী হলের প্রাধ্যক্ষের সম্মানহানির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিার আওতায় আনতে হবে। তদন্ত ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া সব ধরনের অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করতে হবে। যেসব অনলাইন পেজ ও গ্রুপ মুষ্টিমেয় শিক্ষার্থীকে উস্কে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিক্ষোভকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ কর ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’