মির্জাপুরে নিত্যপণ্য কিনতে আসা নারীদের ছবি কৌশলে মোবাইল ফোনে ধারণ করে পর্নোগ্রাফি তৈরির অভিযোগে সোলাইমান মৃধা শিশির নামে এক দোকানিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে ফতেপুর ইউনিয়নের শুভুল্যা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার যুবক শুভুল্যা গ্রামের বেলায়েত মৃধার ছেলে।

পুলিশ জানায়, শুভুল্যা গ্রামে সোলাইান মৃধার একটি মুদি দোকান রয়েছে। সেখানে নিত্যপণ্য কিনতে আসা নারীদের ছবি গোপনে তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে। এসব ছবি এডিট করে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল সে। গত বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার এক নারী তাঁর প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারেন সোলইমান তাঁর ছবি গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করেছে। পরে সেই ছবি এডিট করে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করেছে এবং অনেকের মেসেঞ্জারেও পাঠিয়েছে। এ কথা শুনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ওই নারী সোলাইমানের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। এতে সোলাইমান ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা সোলাইমানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

শুক্রবার সকালে ভুক্তভোগী এক নারী বাদী হয়ে সোলাইমান মৃধা শিশিরের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় সোলইমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মির্জাপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার সোলাইমান মৃধা শিশির ওই এলাকার কয়েকজন নারীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে বলে জানা গেছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ন গ র ফ পর ন গ র ফ

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা কমিয়েছে ভারতের পরিশোধনাগারগুলো, ছাড় কমে যাওয়ার প্রভাব

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারগুলো গত সপ্তাহে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করেছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে। গত মাসে ছাড়ের পরিমাণ কমে আসার কারণে মূলত তাদের তেল কেনা কমেছে। এ খবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

সেই সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করার সময় বলেছেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনে ভারত রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার ব্যয় মেটাতে সহযোগিতা করছে। ফলে তাদের এ ২৫ শতাংশ শুল্ক দেওয়ার পাশাপাশি অনির্দিষ্ট হারে দণ্ড দিতে হবে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ভারত সমুদ্রপথে রপ্তানি হওয়া রুশ অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো, যেমন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, ভারত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও মাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রুশ অপরিশোধিত তেলের কোনো দরপত্র দেয়নি বলে সংশ্লিষ্ট চারটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। এ বিষয়ে ফেডারেল তেল মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করলেও তারা মন্তব্য করেনি।

সূত্রগুলো জানায়, এই চার শোধনাগার নিয়মিতভাবে সরবরাহ চুক্তির ভিত্তিতে রুশ তেল কিনত; কিন্তু এখন তারা বিকল্প জোগানের জন্য স্পট মার্কেটে ঝুঁকেছে—প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যের আবুধাবির মুরবান ক্রুড ও পশ্চিম আফ্রিকার তেল। বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নায়ারা এনার্জি ভারতে রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত শোধনাগারগুলো দেশটির মোট দৈনিক ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন বা ৫২ লাখ ব্যারেল শোধনক্ষমতার ৬০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে।

গত ১৪ জুলাই ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বড় ধরনের শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানো না গেলে যেসব দেশ রুশ তেল কিনছে, সেই দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড দাবি করেছেন, তিনি ‘শুনেছেন’ ভারত রুশ তেল আমদানি বন্ধ করেছে। শুধু তা–ই নয়, এটিকে তিনি ভালো পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি কেনাবেচা বাজারের গতি–প্রকৃতি ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলো রাশিয়ান তেল আমদানি বন্ধ করেছে—এমন কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমার জানা মতে, ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না, এটা ভালো পদক্ষেপ। দেখা যাক, কী হয়।’

রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ট্রাম্পের আক্রমণের জবাবে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পাররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘জ্বালানির কেনার উৎস নির্ধারণের বিষয়ে আমাদের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে সবাই সচেতন। বাজারের সহজলভ্যতা অনুযায়ী আমরা তেল কেনার চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আমাদের ধারাবাধা উৎস নেই।’

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিও ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়। পরিষ্কার জানানো হয়, রাশিয়া ভারতের অংশীদার ‘পরীক্ষিত’। এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির নিজস্ব ভিত্তি আছে। তৃতীয় দেশের লেন্স দিয়ে তা দেখা উচিত নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ