সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে এসেছে। শনিবার শিক্ষার্থী ও শ্রমিকরা দাঙ্গা পুলিশ এবং প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিকের সমর্থকদের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জনের মৃত্যুর পর সার্বিয়ায় কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এ ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। ১২ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকা জনপ্রিয় ভুসিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ডিসেম্বর থেকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২৩ বছর বয়সী ছাত্রী আলেক্সা সিভেটানোভিচ বলেন, “আজ আমরা আমাদের ভিন্নমত প্রকাশ করব.

..  একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্র, আইনের রাষ্ট্রের জন্য, দুর্নীতি, মিথ্যাচার, মিডিয়ার চাপ, নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা কীভাবে লড়াই করছি তা দেখাতে চাই।”

সরকার অবশ্য দুর্নীতি ও অযোগ্যতার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সার্বিয়াকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে।

পুলিশ জানিয়েছে,  বেলগ্রেডের একটি শহরতলিতে একটি গাড়ি বিক্ষোভকারীদের দলকে ধাক্কা দেয়, এতে তিনজন আহত হয়। অন্যদিকে একদল লোক একজন ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষকের উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, তারা রাতভর এবং শনিবার ভোরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা পিওনিরস্কি পার্কের আশেপাশে পার্ক করা ভুসিকপন্থী কৃষকদের ট্রাক্টরের উপর হামলা চালিয়েছিল।
 

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ