ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএম‌পি) ক‌মিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি মনে করেন, বিষয়টি কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁর (ডিএম‌পি ক‌মিশনার) এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত, প্রত্যাহার করা উচিত।

‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করুন, এখনই!’ শীর্ষক মানববন্ধনে ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন। আজ রোববার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে টিআইবি।

ড.

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানের ওপর সবচেয়ে বেশি নিশ্চিত করা বা নারীর অধিকার হরণের প্রতিরোধ করার দায়িত্ব, সেই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা তথা পুলিশ; পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন বলেন ধর্ষণ শব্দটা ব্যবহার না করার জন্য; গণমাধ্যম—আপনাদেরকে যখন অনুরোধ করে তখন আমাদের অবাক হতে হয়। তাঁদের এই অবস্থানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে হয়। কারণ, এর মাধ্যমে তিনি যেটা করছেন, ডিএমপি কমিশনার বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন। ধর্ষকের সুরক্ষা দেওয়ার উপায় সৃষ্টি করে দিচ্ছেন। কোনো অবস্থায় এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁর এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত, প্রত্যাহার করা উচিত।’

গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ডিএম‌পি ক‌মিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি দুটি শব্দ খুব অপছন্দ করি, এর মধ্যে একটি হলো ধর্ষণ। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটা ব্যবহার করবেন না। আপনারা “নারী নির্যাতন” বা “নিপীড়ন” বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।’

আজকের মানববন্ধনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকে, তাদের আচরণে, কথায়-বার্তায়, চর্চায় কিন্তু আমরা নারীবান্ধব অবস্থা দেখতে পাই না। খুবই দুঃখজনক বিষয়।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন সেখানে চর্চার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেন

ইফতেখারুজ্জামান। গণমাধ্যমকর্মীদের ডিএমপি কমিশনারের কথা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান ইফতেখারুজ্জামান। ধর্ষণ যখন ঘটবে অত্যন্ত জোরালোভাবে আরও সেটিকে প্রচার করার আহ্বান জানান তিনি। যাতে এ বিষয় মানুষের নজরে আসে।

খুনিকে চোর বলতে পারবেন না উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশকে তো আমি আনসার বলতে পারব না। পুলিশ পুলিশই। পুলিশ যেভাবে কলঙ্কিত করেছে নিজেদের, সে কারণে কী মানুষ বলেছে “পুলিশ” শব্দটা ব্যবহার করা যাবে না? সেই পুলিশ কীভাবে ধর্ষণ শব্দটা ব্যবহার করা যাবে না—এ ধরনের মন্তব্য রাখতে পারে। সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’

এ সময় অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদাসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সহকারী সমন্বয়ক সাইমুম মৌসুমী। এ সময় তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইফত খ র জ জ ম ন ব যবহ র আম দ র হ র কর অন র ধ ট আইব অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ

চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় মানববন্ধন ও মিছিল করেছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। মানববন্ধন শেষে সমাবেশে নিরাপদ ও বাসযোগ্য মোহাম্মদপুর গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার অন্তত ৭০টি কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মোহাম্মদপুর-আদাবরের সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধন শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের মাঠে জড়ো হয়। রোদের মধ্যে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী স্লোগান দেয় তারা। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও সেখানে আসেন।

দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় কলেজের শহীদ মিনারের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শুরু হয়। এতে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে মোহাম্মদপুরকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে চাই। আজকে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিকে না বলেছে। এভাবে এলাকায় যারা সন্ত্রাসী ও রাহাজানি করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।’

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। তবুও মোহাম্মদপুর সন্ত্রাসী এলাকা, এমন কথা শুনতে হয়। আজকে মাদক আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে। এ দৃষ্টান্ত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক। মোহাম্মদপুর থেকে যাত্রা শুরু হোক মাদক ও সন্ত্রাসকে না বলার।

এ আয়োজনের প্রধান সমন্বয়কারী আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, মোহাম্মদপুর ও আদাবরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও রাজনীতিবিদেরা একসঙ্গে কাজ করলে পরিবর্তন হতে বাধ্য।

সমাবেশ শেষে মিছিল করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এ সময় ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘যে ‍মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক নয়’, ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’, ‘কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানা, মোহাম্মদপুরে হবে না’, ‘চাঁদাবাজের আস্তানা, মোহাম্মদপুরে হবে না’ স্লোগান দেওয়া হয়।

মিছিলটি কেন্দ্রীয় কলেজ থেকে বের হয়ে তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, আসাদ অ্যাভিনিউ, টাউন হল ও শের শাহ সূরী রোড ঘুরে কিশলয় উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেগেটিভ ইক্যুইটি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা জমা দেওয়ার সময় বাড়াল বিএসইসি
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • আগামীকাল গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দেওয়া হবে: আলী রীয়াজ
  • নারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ