ডিএমপি কমিশনার বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন: ইফতেখারুজ্জামান
Published: 16th, March 2025 GMT
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি মনে করেন, বিষয়টি কোনো অবস্থায় গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাঁর (ডিএমপি কমিশনার) এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা উচিত, প্রত্যাহার করা উচিত।
‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করুন, এখনই!’ শীর্ষক মানববন্ধনে ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন। আজ রোববার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে টিআইবি।
ড.
গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গণমাধ্যমে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমি দুটি শব্দ খুব অপছন্দ করি, এর মধ্যে একটি হলো ধর্ষণ। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটা ব্যবহার করবেন না। আপনারা “নারী নির্যাতন” বা “নিপীড়ন” বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।’
আজকের মানববন্ধনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকে, তাদের আচরণে, কথায়-বার্তায়, চর্চায় কিন্তু আমরা নারীবান্ধব অবস্থা দেখতে পাই না। খুবই দুঃখজনক বিষয়।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন সেখানে চর্চার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেন
ইফতেখারুজ্জামান। গণমাধ্যমকর্মীদের ডিএমপি কমিশনারের কথা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান ইফতেখারুজ্জামান। ধর্ষণ যখন ঘটবে অত্যন্ত জোরালোভাবে আরও সেটিকে প্রচার করার আহ্বান জানান তিনি। যাতে এ বিষয় মানুষের নজরে আসে।
খুনিকে চোর বলতে পারবেন না উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশকে তো আমি আনসার বলতে পারব না। পুলিশ পুলিশই। পুলিশ যেভাবে কলঙ্কিত করেছে নিজেদের, সে কারণে কী মানুষ বলেছে “পুলিশ” শব্দটা ব্যবহার করা যাবে না? সেই পুলিশ কীভাবে ধর্ষণ শব্দটা ব্যবহার করা যাবে না—এ ধরনের মন্তব্য রাখতে পারে। সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’
এ সময় অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদাসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সহকারী সমন্বয়ক সাইমুম মৌসুমী। এ সময় তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইফত খ র জ জ ম ন ব যবহ র আম দ র হ র কর অন র ধ ট আইব অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ জসিমের মেয়ে লামিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের পটুয়াখালী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনটির সদস্যরা।
এতে বক্তব্য দেন, সংগঠনটির অন্যতম উপদেষ্টা খান মুহাম্মদ ইউছুফ আলী, সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহিয়ান মাসুম প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি
বক্তারা বলেন, লামিয়া হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর করতে হবে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দিতে হবে। আছিয়া থেকে শুরু করে লামিয়া পর্যন্ত যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোর বিচার অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
সংগঠনটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ভুক্তভোগীদের কেউ ন্যায়বিচার পাননি। লামিয়ার পিতা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন, তা সত্ত্বেও ন্যায়বিচার পায়নি। ফলে সে আত্মহত্যা করেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার কার্য পরিচালনা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ ধর্ষণ করার কথা চিন্তাতেও না আনতে পারে।”
গত ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় লামিয়াকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পরদিন সাকিব মুন্সী নামের অভিযুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাকিব জামিন পাওয়ার সংবাদে মর্মাহত হয়ে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা স্বজনদের।
ঢাকা/হাফছা/মেহেদী