‘মোশাররফের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন জীবন’
Published: 18th, March 2025 GMT
মোশাররফ করিম মানেই অভিনয়ের বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা। তিন দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন তিনি। মঞ্চ-ছোটপর্দা-বড়পর্দা মিলিয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বৈচিত্র্যময় সব চরিত্র দিয়ে বরাবরই আলোচনায় থাকেন এ অভিনেতা। ভিখারি থেকে কোটিপতি, ভালো-মন্দ চোর-পুলিশ-ডাকাত-ভূত এমন কোনো চরিত্র নেই যাতে অভিনয় করেননি তিনি।
আশফাক নিপুণের পরিচালনায় ‘মহানগর-১’ ও ‘মহানগর-২’ সিরিজে ওসি হারুন চরিত্রে অভিনয় করে দারুণভাবে নতুনভাবে জানান দেন নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে। মহানগরে ওসি হারুনের ডায়ালগগুলো এখনও ভক্ত-শ্রোতাদের মুখে মুখে। ওসি হারুন এবারও পুলিশ অফিসার হয়ে হাজির হচ্ছেন। তবে এবার আর ছোটপর্দায় নয়, বড় পর্দায়।
‘চক্কর ৩০২’-এ এবার পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা ‘মইনুল’ হয়ে আসছেন আগামী ঈদুল আজহায়। থ্রিলার, রহস্যের গল্পটি পরিচালনা করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। ক’দিন আগে বেশ নাটকীয় কায়দায় ঈদের মুক্তির ঘোষণা নির্মাতা। সিনেমার পরিচালক শরাফ আহমেদ জীবন ফেসবুকে চার মিনিট ৮ সেকেন্ডের এক ভিডিও পোস্ট করে জানিয়ে দেন ঈদে মুক্তির ঘোষণা। তার ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘মোশাররফ করিমের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন শরাফ আহমেদ জীবন। এ কোন নতুন চক্কর?’
ভিডিওতে দেখা গেছে, পরিচালক জীবনকে হাত-মুখ বেঁধে অন্ধকার ঘরে একটি চেয়ারে বসিয়ে রেখেছেন মোশাররফ করিম। বিরক্তি নিয়ে জীবনকে তিনি বলেন, “তুমি অনেক যন্ত্রণা দিয়েছ আমাকে। এজন্য আটকে রাখা হয়েছে।”
সবশেষ দেখা যায় মূলত ঈদে মুক্তির ঘোষণা দিতেই এই কাণ্ড। যাই হোক অ্যানাউন্সমেন্ট এই ঘোষণা দারুণভাবে গ্রহণ করেন দর্শক। ফলে সিনেমাটি নিয়ে নতুনভাবে আলোচনায় আসে। এরপর প্রকাশ করা হয় টিজার। যে টিজার জানান দেওয়া হয়, হত্যা রহস্য ঘিরে আবর্তিত হবে সিনেমাটির গল্প। যেখানে উঠে আসবে জীবনের নানান অন্ধকার। সব মিলিয়ে টিজারটি বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
সিনেমার গল্প নিয়ে পরিচালক জীবন বলেন, “গল্পটা আমাদের নিজেদের গল্প, দেশের গল্প। একটা মানুষের সম্পর্কের গল্প। দর্শক যদি গল্পের সঙ্গে, চরিত্রের সঙ্গে নিজেদের কানেক্ট করতে পারে তাহলে সিনেমাটি পছন্দ করবে। এখানে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না।”
‘চক্কর’ সিনেমায় মোশাররফ করিমের বিপরীতে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। সঙ্গে আছেন তারিন জাহানসহ অনেকেই। সিনেমাটি মূলত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত। ২০২১-২২ অর্থবছরে ‘চক্কর’ সিনেমার জন্য অনুদান পান জীবন। প্রথমে সিনেমাটির নাম ছিল ‘বিচারালয়’। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে ‘চক্কর ৩০২’।
সিনেমাটিতে মোশাররফ করিম অভিনয় করেছেন মঈনুল চরিত্রে। মঈনুল একজন পুলিশ অফিসার, যে কিনা নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়ে। এটি থ্রিলার গল্প। সেই সঙ্গে মানবিক দিকও আছে। আরও আছে সম্পর্কের কথা।
মোশাররফ করিম বলেন, পরিচালক জীবন আমার পছন্দের মানুষ। তাঁর কাজের ধরন আলাদা। এখানে পরিচালক সুন্দর ও ভিন্ন গল্প বলার চেষ্টা করেছেন। আমার বিশ্বাস, গল্পটা সবার ভালো লাগবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের করা প্রমোশনাল ভিডিওটি সবার দৃষ্টি কেড়েছে। দর্শকরা হলে গিয়ে চক্কর দেখবেন এটি আমার প্রত্যাশা। চক্কর সবার জন্য।
শুটিং হয়েছে ঢাকা শহর, মানিকগঞ্জ, দিয়াবাড়ি, জৈনাবাজারসহ নানা জায়গায়। সদরঘাটেও শুটিং হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, চক্কর জীবনের গল্প। আমাদের গল্প। সবার গল্প। সবাই মিলে দেখার গল্প।
পরিচালক নিশ্চিত করেছেন বেশ কয়েকটি হলে ঈদে মুক্তি পাচ্ছে চক্কর। শুরুর দিকে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে জোর দেবেন মুক্তির বিষয়ে। মোশাররফ করিম এই সিনেমা নিয়ে বেশ উৎফুল্ল। তাঁর দর্শকরাও অনেক দিন পর ঈদে নতুন সিনেমা পাচ্ছেন। এদিকে ঈদে অনেক তারকার সিনেমাই মুক্তি পাচ্ছে। সেখানে নতুন সংযোজন হচ্ছে মোশাররফ করিমের চক্কর।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত