খিলগাঁওয়ে যাত্রী বেশে গাড়িতে দুজন, এসি ছাড়তে বলে ছিনতাই: পুলিশ
Published: 18th, March 2025 GMT
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে চালককে জিম্মি করে প্রাইভেট কার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত ছিনতাইকারীরা যাত্রী বেশে ওই প্রাইভেট কারে উঠেছিলেন। পরে এসি ছাড়ার কথা বলে গাড়িটি ছিনতাই করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার খিলগাঁও থানার ত্রিমোহনী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন নাজমুস সালেহীন (২৮) ও মো.
খিলগাঁও থানা–পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে অপরিচিত একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে প্রাইভেট কারের চালক সিরাজুল ইসলামের কাছে ফোন আসে। বলা হয়, তাঁরা খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ঢাল থেকে মোস্তমাঝির মোড়সংলগ্ন গ্রিন সিটিতে যাবেন। পরে সেখান থেকে গুলশানে যাবেন। ভাড়া হিসেবে সাড়ে চার হাজার টাকা ঠিক করা হয়। চালক গাড়ি নিয়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ঢালে গেলে একজন (যিনি ড্রাইভারকে ফোন করেছিলেন) গাড়িতে ওঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আরেকজন গাড়িতে উঠে খিলগাঁও এলাকার নন্দিপাড়া শেখের জায়গা সেতু–সংলগ্ন গ্রিন সিটি বালুর মাঠে যেতে বলেন।
পুলিশ জানায়, চালক বালুর মাঠে যাওয়ার পর দুই যাত্রী বলেন, সেখানে তাঁদের প্লট আছে। তা পরিমাপ করে গুলশানে যাবেন। সেখানে থেকে তাঁদের সঙ্গে আরও একজন যোগ দেন। পরে প্রাইভেট কারে উঠে গরম লাগছে বলে চালককে এসি ছাড়তে বলে। চালক এসি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা তাঁকে জিম্মি করে মুঠোফোন কেড়ে নেন। বেলা সোয়া একটার দিকে চালককে খিলগাঁও থানাধীন নন্দীপাড়া সেতুর পাশে জোরপূর্বক নামিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। পরে গাড়িটির মালিক সাইফুল ইসলাম (৫২) বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা করেন।
থানা সূত্র আরও জানায়, মামলার পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় সাত ঘণ্টার মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি মুঠোফোন ও ছিনতাই হওয়া প্রাইভেট কারটি উদ্ধার করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ নত ই
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’