সিরাজগঞ্জে সংঘর্ষে আহত সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 19th, March 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত ওই নেতার নাম কবির হোসেন (৩৫)। তিনি সোদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি উপজেলার চাদপুর গ্রামের ফজল হকের ছেলে।
এনায়েতপুর থানার সৌদিয়া চাদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, আহত কবির হোসেন ঢাকার উত্তরা এলাকার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে কবির হোসেনের মৃত্যু সংবাদ এলাকায় পৌঁছালে এনায়েতপুরে বিএনপির একাংশের প্রায় ৩০০ নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বেতিল চাদপুর মোড় থেকে মিছিল বের হয়ে এনায়েতপুর মেডিক্যাল কলেজ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মাঝে কেজির মোড়ে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এ সময় সাবেক যুবদল নেতা আতাউর রহমান আতা, সাইদুল ইসলাম রাজ ও সাবেক ছাত্রদল নেতা এস,এম কাশেম বক্তব্য রাখেন। বক্তারা হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন এবং এর কিছুক্ষণ পর এনায়েতপুর থানার সামনে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের গ্রুপের সমর্থক সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন আলী মেম্বারের নেতৃত্বে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সমর্থক থানা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মনজুর রহমান মঞ্জু শিকদার নেতৃত্বে দলের একাংশের নেতাকর্মীরা তাতে বাধা দেন। ওই সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে উভয়পক্ষের সাতজন আহত হন। নিহত কবির হোসেন সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের গ্রুপের সমর্থক।
এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানি রাত সাড়ে ১০টার দিকে বলেন, বিএনপির দুইগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ আহত কবির হোসেনের মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌঁছার পর তারাবির নামাজের সময় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা হত্যাকারীদের ফাসির দাবি করে থানার সামনে মানববন্ধন করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। স্বজনরা নিহতের মরদেহ ঢাকা থেকে নিয়ে আসছে। এ ঘটনায় এখনো কোন পক্ষ মামলা করেনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ব এনপ র ছ ত রদল স ঘর ষ ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫