গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতা যুদ্ধাপরাধ, আমেরিকার ভূমিকা আরও ন্যক্কারজনক: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
Published: 19th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, দুই দিন ধরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজার নিরীহ জনগণের ওপর যে বর্বর হামলা চালাচ্ছে তা শুধু অমানবিক নয়, মানবতার বিরুদ্ধে এক জঘন্য অপরাধ।
বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে মাওলানা মামুনুল হক ও জালালুদ্দীন আহমদ এ কথাগুলো বলেন। তাঁরা বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় ইসরায়েল যে নৃশংসতা দেখাচ্ছে, একে মানবতার বিরুদ্ধে এক নির্মম হত্যাযজ্ঞ ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে। নির্বিচার বোমাবর্ষণ, হাসপাতাল ও স্কুলে হামলা, খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া—এ সবই গণহত্যার সুস্পষ্ট প্রমাণ। এ ক্ষেত্রে বিশ্বমোড়ল আমেরিকার ভূমিকা আরও ন্যক্কারজনক। এরা গাজা সমস্যা সমাধানের নামে ইসরায়েলি নেকড়েদের গাজার নিরস্ত্র মুসলমানদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে। তাদের হিংস্র থাবা থেকে নিষ্পাপ শিশু, অবলা নারী, বয়োবৃদ্ধ কেউই নিরাপদ নয়।
বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের দুই নেতা আরও বলেন, বিশ্ববাসী যখন ন্যায়বিচারের জন্য সোচ্চার, তখন ইসরায়েলের এই রক্তপাতের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারা শুধুই অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। শিশু, নারী ও বেসামরিক মানুষদের হত্যা কোনোভাবেই আত্মরক্ষা হতে পারে না, বরং এটি যুদ্ধাপরাধ। এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়, ইসরায়েল ও তার দোসর যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, মধ্যপ্রাচ্য তথা বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অবৈধ দখলদার জায়নবাদী ইহুদিদের পবিত্র আকসা থেকে উৎখাত করে আলাস্কা অঞ্চলে পুনর্বাসন করা দরকার। মানুষের সমাজে বসবাসের কোনো শিক্ষা ইসরায়েলি নেকড়েদের কখনোই ছিল না। এরা মধ্যপ্রাচ্যে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার প্রক্সি বটে। গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর, অবরোধ প্রত্যাহার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর হস্তক্ষেপ জরুরি।
বিবৃতিতে বলা হয়, মজলুম গাজাবাসীর পক্ষে দাঁড়ানো এখন বিবেক ও সময়ের দাবি। যারা নীরব, তারা এই হত্যাযজ্ঞের অংশীদার। গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে সরকারের বিবৃতি ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান খেলাফত মজলিসের নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন জামায়াতের আমিরের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ: সালাহউদ্দিন আহমদ
লন্ডন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ‘একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন’ বলে জামায়াতে ইসলামী যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তার জবাব দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, কোনো দলের প্রতি অনুরাগ নয়, বরং ২০২৬ সালের রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে বলে জামায়াতের আমির যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেটার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত নির্বাচনের নতুন সময়সীমা সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই বৈঠক নিয়ে জামায়াতে ইসলামী যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাতেই বলা আছে যে জামায়াতের আমির গত ১৬ এপ্রিল একটি বিদেশি মিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ২০২৬ সালের রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে বলে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছিলেন। ফলে লন্ডন বৈঠকের পর নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে যে ঘোষণা, তা জামায়াতের আমিরের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ; এটা কোনো দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ নয়।
আরও পড়ুনফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট, একমত ইউনূস ও তারেক১৫ ঘণ্টা আগেলন্ডন বৈঠক নিয়ে আজ শনিবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের প্রতিক্রিয়া গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে এ কথা বলেন। তিনি এ–সংক্রান্ত জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) প্রতিক্রিয়ারও জবাব দেন।
গতকাল শুক্রবার লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে আগামী বছরের রমজান মাসের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে। এরপর শুক্রবার রাতে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল এনসিপি। দলটি মনে করে, নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচনসংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত।
বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলটি (এনসিপি) লন্ডন এই বৈঠকের ঘোষণাকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছে। এ ক্ষেত্রে দলীয় দৃষ্টির ঊর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তাদের আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের পরামর্শ থাকবে।
আরও পড়ুনএকটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে: জামায়াত১ ঘণ্টা আগেলন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে যে প্রক্রিয়ায় সমঝোতা হয়েছে এবং সেটি যেভাবে যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। দলগুলোর নেতারা বলছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যাপারে তাঁদের ভিন্নমত নেই। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের সমঝোতায়ও তাঁরা অসন্তুষ্ট নন। তাঁদের প্রশ্ন এক জায়গায়। সেটি হচ্ছে, সরকার এভাবে একটি দলের সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দিতে পারে কি না? এটা কতটা নৈতিক।
আরও পড়ুনলন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি১৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইউনূস-তারেকের ‘সন্তুষ্টি’তে স্বস্তি টেকসই হবে কি ৯ ঘণ্টা আগে