জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৪ জন প্রধান শিক্ষকসহ ২৪ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। এসব মামলাকে মিথ্যা দাবি করে সেগুলো থেকে তাঁদের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন শিক্ষকেরা।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পল্লিবিদ্যুৎ মোড়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।

মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সভায় হাজী ছোট কলিম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবদুল হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসানসহ কয়েকজন শিক্ষক বক্তব্য দেন। তাঁরা এসব মামলাকে মিথ্যা দাবি করে বলেন, রাজনৈতিক ও পারিবারিক বিরোধের জেরে অহেতুক শিক্ষকদের মামলায় জড়ানো হয়েছে। আসামি হওয়ায় তাঁরা পাঠদানে অংশ নিতে পারছেন না। এতে বিদ্যালয়গুলোয় পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি করেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাওনা চৌরাস্তার পাশে পল্লিবিদ্যুৎ মোড়ে গোলাগুলিতে কয়েকজন আন্দোলনকারী নিহত হন। এ ঘটনায় বিভিন্ন সময় মামলা হয়েছে। অন্যদের পাশাপাশি মামলায় আসামি করা হয়েছে শিক্ষকদের। শ্রীপুরে মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল হাসান, রাজেন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আসকর, মোসলেহ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাহার তালুকদার, তেলিহাটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী মনসুর, মাওনা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান সিরাজ, আলহাজ ধনাই বেপারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, গাজীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম, গজারিয়া দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট রফিকুল ইসলাম, সিংগারদিঘী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক সরফুল আলম, স্যারস এডুকেশন সেন্টারের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামসহ ২৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পল্লিবিদ্যুৎ মোড়ে গোলাগুলির সময় আমি সেখানে ছিলাম না। অথচ আমার নাম আসামির তালিকায়। মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে এখন আমি ঘরছাড়া।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরছড়া ট্র্যাজেডির ২৮তম বার্ষিকী পালিত
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • সাইক্লিস্ট হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন
  • ‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
  •  সোনারগাঁয়ে প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি কোম্পানিকা সেতু রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
  • রাজশাহীতে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
  • সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে
  • কাছারিবাড়িতে হামলা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে, রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত  নিদর্শন নষ্ট হয়নি: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
  • চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে