বাংলাদেশের এভিয়েশন ও পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১০ নারীকে ‘এটিজেএফবি এভিয়েট্যুর উইমেন্স আইকন অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করা হয়েছে। এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন এভিয়েশন ও ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (এটিজেএফবি) আয়োজনে ছিল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় আসর।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামশন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান।

অনুষ্ঠানে পাইলট ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট অফিসার ফারিহা তাবাসসুম এ সম্মাননা অর্জন করেন। অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসার তাহমিনা আক্তার এভিয়েশন গ্রাউন্ড সার্ভিস ক্যাটাগরিতে বিমানের ম্যানেজার গ্রাউন্ড সার্ভিস নিলুফা ইয়াসমিন, ক্যাবিন ক্রু ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট স্টুয়ার্ড জিনিয়া ইসলামকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এছাড়াও ট্যুরিজম সিকিউরিটি ক্যাটাগরিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা, হোটেল উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে হোটেল সারিনার চেয়ারপারসন সাবেরা সারওয়ার নীনা, ট্যুরিজম উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে ওয়ান্ডার উইম্যানের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সাবিরা মেহরিন সাবা এবং প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে গ্যালাক্সি বাংলাদেশের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান ওয়ামিয়া ওয়ালিদ সম্মানিত হয়েছেন।

সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে বৈশাখী টিভির যুগ্ম সম্পাদক রিতা নাহার এবং ভ্রমণ ক্যাটাগরিতে বিশ্বের ১৭৮টি দেশে বাংলাদেশের পতাকা বহনকারী প্রথম বাংলাদেশি নাজমুন নাহার এই অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, এটিজেএফবির আজকের এই আয়োজন নারীর নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। আজ যে ১০ জন নারীকে দেখলাম; তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। এখন তারা সমাজের অন্যান্য নারীদের উৎসাহিত করবেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহান বলেন, এটিজেএফবির আজকের এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। এ ধরনের উদ্যোগ নারীকে ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে। নারীকে সামনে এগিয়ে নিতে এই ধরনের উদ্যোগ প্রতি বছর নিয়মিত আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো.

মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। 

অনুষ্ঠানে বিমানের এমডি ও সিইও ড. মো. সাফিকুর রহমান বলেন, নারী সহকর্মীদের সাফল্যে বিমান উৎসাহিত বোধ করে। এটিজেএফবির এ ধরনের আয়োজনে বিমানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। 
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এটিজেএফবির সভাপতি তানজিম আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব।

আইকন অ্যাওয়ার্ডের টাইটেল স্পন্সর করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সহযোগী হিসেবে ছিল ইথিউপিয়ান এয়ারলাইন্স।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বেকহাম এখন থেকে ‘স্যার’

খেলাধুলা ও দাতব্যকাজে অবদানের জন্য ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ফ্যাশন আইকন ডেভিড বেকহামকে ‘নাইটহুড’ দেওয়া হয়েছে। তাঁর পাশাপাশি রক ব্যান্ড ‘দ্য হু’–এর গায়ক ও সহপ্রতিষ্ঠাতা রজার ডালট্রে ও হলিউড অভিনেতা গ্যারি ওল্ডম্যানকেও একই সম্মানে ভূষিত করা হয়।

আরও পড়ুন৩৭ পেরোনো মেসি এবার ৪৭তম ট্রফির খোঁজে ২ ঘণ্টা আগে

ইংল্যান্ডের হয়ে ১১৫ ম্যাচ খেলা বেকহাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলান ও পিএসজির মতো ক্লাব মাতিয়েছেন। ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী ৫০ বছর বয়সী সাবেক এই মিডফিল্ডার মেজর লিগ সকারের (এমএলসি) ক্লাব ইন্টার মায়ামির সহমালিক। সম্মানসূচক নাইটহুড পাওয়ার পর বেকহামের নামের সঙ্গে এখন ‘স্যার’ উপাধি যোগ হবে এবং তাঁর স্ত্রী স্পাইস গার্লস ব্যান্ডের সাবেক সদস্য ভিক্টোরিয়া বেকহাম ‘লেডি বেকহাম’ হিসেবে পরিচিত হবেন।

নাইটহুড পাওয়ার আলোচনায় আগে থেকেই ছিলেন বেকহাম। ২০০৩ সালে অফিসার অব দ্য অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার সম্মানে তাঁকে ভূষিত করা হয়। ফ্যাশন শিল্পে অবদানের জন্য পরে ভিক্টোরিয়াও একই সম্মান পান। প্রেস অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া বিবৃতিতে বেকহাম বলেছেন, ‘পূর্ব লন্ডনে বাবা–মা ও দাদা–দাদিদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি, যাঁরা ভীষণ দেশপ্রেমিক ছিলেন এবং ব্রিটিশ হওয়ার জন্য গর্ববোধ করতেন। কখনো ভাবিনি এমন সত্যিকারের সম্মান পাব। আমি খুব ভাগ্যবান; কারণ, যে কাজ আমি করি সেটা করতে পারছি এবং তার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞ।’

আরও পড়ুনক্লাব বিশ্বকাপ জেতার আশায় কোন দল কত খরচ করল৫ ঘণ্টা আগে

খেলাধুলা, ফ্যাশন ও ব্যবসা মিলিয়ে বেকহাম নিজেকে দিন দিন বৈশ্বিক আইকনে পরিণত করার ফল হিসেবে এ সম্মান পেলেন। যুক্তরাজ্যের সম্মানসূচক উপাধিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্মদিনের ‘অনার্স লিস্ট’–এ তাঁকে গতকাল নাইটহুড দেওয়া হয়।

মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেরি এজনেস পারমেন্তিয়ের বেকহাম ও ভিক্টোরিয়াকে নিয়ে বেশ কিছু নিবন্ধ লিখেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, এই সম্মান ‘শক্তিশালী প্রতীক।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘একজন সম্মাননীয় ব্রিটিশ হিসেবে এটা তার ইমেজকে আরও শক্তিশালী করল।’

বেকহামের পোশাক থেকে চুলের ছাঁট—ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু থেকেছে সব সময়ই। নিজেকে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডে পরিণত করা সাবেক এই ফুটবলারকে প্রতিকূল পরিস্থিতিও পার হতে হয়েছে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নকআউট ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ইংল্যান্ডের ‘সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ’–এর ট্যাগ পেয়েছিলেন বেকহাম।

২০১২ অলিম্পিক আয়োজনের স্বত্ব লন্ডনকে পাইয়ে দেওয়ায় বড় অবদান ছিল বেকহামের। তখন থেকেই নাইটহুড পাওয়ার আলোচনায় ছিলেন তিনি। তবে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর তাঁর নাইটহুড পাওয়ার প্রক্রিয়া থামিয়ে দিয়েছিল যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ। পরে অভিযোগটি থেকে খালাস পান বেকহাম।

আরও পড়ুনফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ: কী, কেন, কীভাবে৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রি–কিকে খ্যাতি পাওয়া বেকহাম ২০১৩ সালে বুট তুলে রাখার আগেই নিজের ক্যারিয়ারকে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার কথা ভেবেছেন এবং সাফল্যও পেয়েছেন। নেটফ্লিক্সে ২০২৩ সালে প্রচারিত ‘বেকহাম’ তথ্যচিত্রে তিনি বলেছিলেন, ‘জানতাম একটা সময় আমার ক্যারিয়ার শেষ হবে, ফুটবলের পরেও আমি ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছি।’

তবে খেলোয়াড়ি জীবনে সেরা সব ফ্যাশন হাউস, সৌন্দর্যের ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে লোভনীয় অঙ্কের চুক্তি করেছেন বেকহাম। তাঁর জনপ্রিয়তা কোনো বয়স মানেনি। ইংল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনি যুক্তরাস্ট্রের বাজারেও ঢুকেছেন। শুধু তা–ই নয়, ‘স্টুডিও ৯৯’ নামে একটি প্রযোজনা হাউসও আছে বেকহামের এবং ২০ বছর ধরে তিনি ইউনিসেফের দূতের দায়িত্বও পালন করছেন। সমাজবিজ্ঞানী এলিস ক্যাশমোরের মতে, ফুটবলের কারণে এখন বেকহাম সবচেয়ে পরিচিত নন, বরং ‘বেকহাম নামের ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার জন্য’ তিনি বেশি পরিচিত। দ্য টাইমসের এ বছরের র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী বেকহাম ব্র্যান্ডের মূল্য ৫০ কোটি পাউন্ড।

২০১১ সালে প্রিন্স উইলিয়াম এবং ২০১৮ সালে প্রিন্স হ্যারির বিয়েতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের নিমন্ত্রণ পান বেকহাম। ২০২২ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর কফিন দেখতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা এড়িয়ে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ব্রিটেনের বিভিন্ন অঙ্গনের বেশ কিছু তারকা। কিন্তু বেকহাম লাইনে প্রায় ১২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর রানিকে সম্মান জানান। তখন থেকেই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় বেকহাম নামের সঙ্গে ‘স্যার’ উপাধি যোগ হওয়াটা স্রেফ সময়ের ব্যাপার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইঞ্জিন বিকল, সাড়ে ৩ ঘণ্টা আটকে ছিল ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’
  • বেকহাম এখন থেকে ‘স্যার’