‘যারা এ জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে এবং অন্যায় করেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়বো। আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপির সব নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের চিকিৎসকরা ও আইনজীবীরাও আপনাদের পাশে থাকবে। তাদেরকেও সেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপনার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তার বিচার আপনি পাবেনই।’ 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পটুয়াখালীর এক শহীদের ভুক্তভোগী মেয়ের মা’র সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ কথা বলেন। এই শহীদ পরিবারটির পাশে থাকারও অঙ্গীকার করেন তিনি। 

এ সময় ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা তারেক রহমানকে বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য যে মানুষটি প্রাণ দিল তার মাত্র ৮ মাসের মাথায় সেই দেশের মানুষরা যদি এই প্রতিদান দেয় তাহলে আমি কি নিয়ে বাঁচবো। আমি আমার মেয়ের নিরাপত্তা চাই, আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই এবং যারা আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। সুষ্ঠু বিচার না পেলে আমি তিন সন্তান নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবো’। 

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হাসান মামুন, বিএনপি নেতা মোশতাক আহমেদ পিনু, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো.

মজিবুর রহমান টোটনসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হাসান মামুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এবং ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। পরে তিনি মেডিকেল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করেন।
 
বিএনপি নেতা হাসান মামুন বলেন, ‘ধর্ষণের মতো একটি জঘন্য ঘটনাকে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে পরোক্তভাবে ধর্ষকদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য এক ধরণের কৌশল অবলম্বন করা হয়। সকল অপরাধীকে আমরা অপরাধী হিসেবে দেখি এবং অপরাধীর শাস্তির জন্য আমরা সর্বস্ব ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত আছি’।
 
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা ধামাচাপ দেওয়া বা ধর্ষকদের পক্ষাবলম্বন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। 

গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি এলাকায় জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পিতার কবর জিয়ারত করে নানা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। পথিমধ্যে সন্ধ্যাও হয়ে যায়। এ সময় একই এলাকার মুন্সী বাড়ীর কাছে পৌঁছালে স্থানীয় মৃত মামুন মুন্সীর ছেলে সাকিব মুন্সী (১৯) ও সোহাগ মুন্সীর ছেলে সিফাত মুন্সী (২০) ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক একটি নির্জন বাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ সময় ওই দুই যুবক ধর্ষণের ভিডিও তাদের মোবাইলে ধারণ করে মুখ বন্ধ রাখতে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর ধর্ষক সাকিব মুন্সীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু সিফাত মুন্সীকে পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ র র জন য এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”

আরো পড়ুন:

বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান

নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’

তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।

প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে;  যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।

বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
  • নাগরিক সমাজ শাসকদের পক্ষে থাকে কেন?
  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়