তুরস্কের একটি আদালত দুর্নীতির অভিযোগে বিচার শুরুর অপেক্ষায় থাকা ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরাম ইমামোগলুকে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও একাধিক সম্প্রচারমাধ্যম।

তুর্কি আদালতের রোববারের এ পদক্ষেপ এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রেসিডেন্ট  রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভে ইন্ধন জোগাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ইমামোগলুকে এই মুহূর্তে এরদোয়ানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হচ্ছে, দিন কয়েক আগে তাকে দুর্নীতি, সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তাসহ একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

রোববার জেলে পাঠানোর আগেই, তুরস্কের প্রধান বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ও হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি ইউরোপের নেতারাও ইমামোগলুকে আটক করার ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অগণতান্ত্রিক’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তুরস্কের সরকারি কৌঁসুলিরা গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের এ মেয়রের বিরুদ্ধে দুটি তদন্ত শুরু করে। তার মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগে হওয়া তদন্তের অংশ হিসেবেই ৫৪ বছর বয়সী ইমামোগলু ও আরও অন্তত ২০ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে, বলেছেন আদালত।

বেশ কয়েকটি জরিপে জনপ্রিয়তায় এরদোয়ানের চেয়ে এগিয়ে থাকা ইমামোগলু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

‘এগুলো অকল্পনীয় অভিযোগ ও অপবাদ,’ বলেছেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত রস ক এরদ য় ন এরদ য় ন

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ