এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি প্রথম পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে অবশ্যই জরুরি কিছু নিয়মকানুন মেনে লিখতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রশ্নের ধরন ও উত্তর লেখার সঠিক নিয়ম।

Reading Test-৫০ নম্বর

Seen Passage (সিন প্যাসেজ): পাঠ্যবইয়ের ইউনিটগুলো থেকে তিনটি প্রশ্ন প্রণয়ন করা হবে ১, ২ ও ৩ নম্বর। এই অংশ থেকে মোট দুটি Seen Passage থাকবে। আর দুটি Seen Passage থেকেই থাকবে প্রশ্ন করা হবে ৪টি।

*প্রশ্ন নম্বর ১

১ নম্বরে Multiple Choice Questions (MCQ) প্রশ্ন থাকবে সাতটি। প্রতিটি বহুনির্বাচনি প্রশ্নে চারটি করে বিকল্প উত্তর দেওয়া থাকবে। বিকল্প উত্তরগুলো থেকে সবচেয়ে সঠিক উত্তরটি বাছাই করে লিখতে হবে। প্রশ্নে নম্বর থাকবে ৭।

*প্রশ্ন নম্বর ২

২ নম্বর প্রশ্নটি হবে Answering questions–এর ওপর। Answering questions দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন: Open ended (যার উত্তর কোনো fixed নয়) এবং cloze ended (যার উত্তর অবশ্যই fixed) প্রশ্ন। এই দুই ধরনের মিলিয়ে মোট পাঁচটি প্রশ্ন থাকবে। এই প্রশ্ন দিয়ে স্মৃতিশক্তি পরীক্ষা, সৃষ্টিশীলতা ও অনুধাবন ক্ষমতা, বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন শক্তি ইত্যাদি যাচাই করা হবে। প্রশ্নে নম্বর থাকবে ১০।

*প্রশ্ন নম্বর ৩

Seen Passage ২ (পাঠ্যবইয়ের প্যাসেজ) থেকে ৩ নম্বর Gap filling without clues বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। মনে রেখো, সিন প্যাসেজ-২–এর ওপর ভিত্তি করে এই প্রশ্নে Gap filling without clues থাকবে। এই প্রশ্নে পাঁচটি শূন্য স্থানসহ একটি passage থাকবে। প্যাসেজটি পড়ে শুধু উত্তরগুলো লিখতে হবে। পুরো প্যাসেজ লেখার দরকার নেই। প্রশ্নে নম্বর থাকবে ৫।

Unseen Passage (দিন প্যাসেজ): মনে রেখো এটি পাঠ্যবইয়ের বাইরের প্যাসেজ থেকে থাকবে। এই প্যাসেজটি অবলম্বনে ৪ ও ৫ নম্বর প্রশ্ন থাকবে।

*প্রশ্ন নম্বর ৪

৪ নম্বর প্রশ্ন থাকবে Information transfer–এর ওপর। এখানে পাঁচটি শূন্যস্থান থাকবে। শূন্যস্থানগুলো table format-এ উপস্থাপিত হবে। সেগুলো যথাযথ তথ্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করবে। প্রশ্নে নম্বর থাকবে ৫।

*প্রশ্ন নম্বর ৫

৫ নম্বর প্রশ্নের ক্ষেত্রে প্রদত্ত unseen passage-টির summary লিখতে হবে। Summary অংশে লেখা ক্ষেত্রে মূলভাবটি অবশ্যই বুঝে লিখতে হবে। এটির লাইন তিন ভাগের এক ভাগ হবে। Summary-তে পরোক্ষ উক্তি, নিজস্ব শব্দমালা, সরল বাক্যমালা ব্যবহার করবে। সবকিছুই প্রশ্নে দেওয়া আনসিন প্যাসেজ ঠিকমতো পড়ে সে অনুযায়ী লিখবে। এ প্রশ্নে নম্বর থাকবে ১০।

*প্রশ্ন নম্বর ৬

৬ নম্বর প্রশ্নটি Matching নিয়ে। এখানে বাক্যগুলোকে ম্যাচিং করতে হবে। সব মিলিয়ে তিনটি কলাম থাকবে। প্রতিটি কলামে পাঁচটি বাক্যাংশ থাকবে। তিনটি কলাম থেকে বাক্যাংশ নিয়ে পাঁচটি অর্থপূর্ণ বাক্য তৈরি করতে হবে। প্রশ্নে নম্বর থাকবে ৫।

*প্রশ্ন নম্বর ৭

৭ নম্বর প্রশ্ন থাকবে Rearranging-এর ওপর। মোট আটটি এলোমেলোভাবে দেওয়া বাক্যকে ধারাবাহিকভাবে সাজাতে হবে। যাতে এটি পড়লে ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়। উত্তরপত্রে বাক্যগুলোর বাঁ পাশের বর্ণমালা সাজিয়ে লিখলেই চলবে। প্রশ্নে নম্বর থাকবে ৮। যেমন 1-c, 2-d, 3-a, 4-b, 5-h, 6-e, 7-g, 8-f.

আরও পড়ুনএসএসসি ২০২৫-এর একটি পরীক্ষা পেছাল, নতুন রুটিনে কোন পরীক্ষা কবে২০ মার্চ ২০২৫পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এর ওপর পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভোল পাল্টে’ সক্রিয় কিশোর গ্যাং, অতিষ্ঠ বাসিন্দারা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এলাকায় নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবন, মারামারি, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। তবে এখন ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিড়েছে তারা।

সম্প্রতি এলাকাটিতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর আলম (৫২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। মসজিদের পাশে জুয়ার আসর বসানো ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ৩ এপ্রিল তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এরপর গত শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকজন স্থানীয় তরুণ। ওই তরুণেরা রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় মিছিল-সমাবেশে কিশোরদের ব্যবহার করে আসছেন। ফলে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও এসব কিশোরকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশ্রয় দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আগে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল চর আবাবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দারের হাতে। তাঁরা এসব কিশোরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই কিশোরেরা ভোল পাল্টে বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় হচ্ছে। আবদুর রহিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি এসব তরুণকে নতুন করে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছেন। রহিম ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও তাঁর পদপদবি নেই।

জাহাঙ্গীর আলম খুনের ঘটনায় আবদুর রহিমকেও আসামি করা হয়। মামলার পর তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আমি প্রশ্রয় দিচ্ছি—এমন অভিযোগ প্রায় করা হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’

ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংকে আমি কখনো প্রশ্রয় দিইনি। তারা (কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা) আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করত।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দলীয় কোনো নেতা-কর্মী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রশ্রয় দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নেতা-কর্মীর অপকর্মের দায় দল নেবে না।

জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত ৭ এপ্রিল লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। আদালত রায়পুর থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মসজিদের আশপাশে জুয়ার আসর ও মাদক সেবন করত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে সাব্বির হোসেন, জুবায়ের হোসেনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৮–১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা করেছেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।

জানতে চাইলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, কিশোর-তরুণদের খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের ফেরাতে না পারলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। কেউ যাতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ