উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলের দুটি অংশের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার ৫০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ছয়টায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি জানান মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের নবগঠিত কমিটি এবং পদবঞ্চিত সংক্ষুব্ধ কর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ২৪ মার্চ থেকে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে যেকোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে মর্মে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের জানমাল ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে উপজেলা প্রশাসন চত্বর ও এর আশপাশের ৫০০ গজ এলাকায় ২৬ মার্চ সকাল ৮টা থেকে ২৭ মার্চ সকাল ৮টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এ সময় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য-আগ্নেয়াস্ত্র, সব প্রকার দেশীয় অস্ত্র বহনসহ ওই এলাকায় পাঁচজনের অধিক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা বা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

১৮ মার্চ বিএনপির চট্টগ্রাম জেলা পুনর্গঠন কমিটির সিদ্ধান্তে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৪ মার্চ মিরসরাই উপজেলা, বারিয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার। উপজেলা বিএনপির কমিটিতে আবদুল আওয়াল চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও আজিজুর রহমান চৌধুরীকে সদস্যসচিব মনোনীত করা হয়। ঘোষিত এ কমিটির বিরোধিতা করে ২৫ মার্চ দুপুরে মিরসরাই উপজেলা সদরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ করে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপজেলা বিএনপির একটি অংশ। মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের অনুসারীদের করা সেই ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, ২৬ মার্চ সকালে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁরা। সেখানে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতা-কর্মীরা এলে তাঁদের প্রতিহত করা হবে।

জানতে চাইলে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন প্রথম আলোকে বলেন, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে ঘিরে দুটি পক্ষের বিরুদ্ধে সংঘাত ও সংঘর্ষের গোয়েন্দা তথ্য এবং মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে সংঘাত এড়াতে ও জনগণের জানমাল রক্ষায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শহীদ মিনার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সতর্ক অবস্থান রয়েছে। শহীদ মিনার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অন্যান্য সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পালিত হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রসর ই উপজ ল কর মকর ত ব এনপ র ১৪৪ ধ র এল ক য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা