নির্বাচনের পরে সংস্কার হবে না: নাহিদ ইসলাম
Published: 28th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান তৈরির কথা বলছি। আমরা মনে করি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিচার ছাড়াই যদি আমরা নির্বাচনের দিকে আগাই তাহলে নির্বাচনের পরে যে সরকার আসবে তারা যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলমান রাখবে সে নিশ্চয়তা আমাদের নেই। তাই আমরা চাই বিদ্যমান আইনের মধ্যেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে সিরাজগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিল উপলক্ষ্যে আয়োজিত ইফতারপূর্ব সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি তরুণদের উদ্যোগে গঠিত একটি রাজনৈতিক দল, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সৃষ্টির জন্য কাজ করছে। আমরা বলেছি রাষ্ট্রের সংস্কার হতে হবে, রাষ্ট্রের মৌলিক পরিবর্তন হতে হবে, কারণ পরিবর্তনের জন্যই এই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। যদি সংস্কার ও পরিবর্তন না হয়, তাহলে কেন এতো মানুষ জীবন দিলেন, কেন এতো মানুষ রক্ত দিলেন। আমরা দেখছি অনেকে সংস্কারকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচনের দিকে যেতে যাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজগঞ্জের মানুষের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম আগামীতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, এস এম সাঈদ মোস্তাফিজ, উত্তরাঞ্চলীয় সংগঠক জুথি, আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্য নেহাল, ফজল হোসেন ও মহসিন রেজা প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প ন হ দ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ