শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল আট দেশ, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
Published: 29th, March 2025 GMT
দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে শুক্রবার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। এতে মিয়ানমারের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে থাইল্যান্ডে। দক্ষিণ-পশ্চিম চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
শুক্রবার রাত পৌনে একটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিয়ানমারের জান্তা সরকারের হিসাব অনুযায়ী দেশটিতে অন্তত ১৪৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৩২ জনের বেশি। থাইল্যান্ডে অন্তত নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুই দেশেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন বহু মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যমতে, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার একটি পরাঘাত (আফটার শক) হয়।
আরও পড়ুনসাত শ কোটি টাকার ৩৩তলা ভবন মুহূর্তে ৩ তলার সমান ধ্বংসস্তূপ৬ মিনিট আগেভূমিকম্পের পর রাজধানী নেপিডো, মান্দালয়, সাইগাইংসহ ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। দেশটির সামরিক বাহিনী পরিচালিত সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি জানিয়েছে, নিহত ১৪৪ জনের মধ্যে নেপিডোয় ৯৬ জন, সাইগাইংয়ে ১৮ জন ও মান্দালয়ে ৩০ জন রয়েছেন। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শক্তিশালী কম্পনে নেপিডো, সাইগাইং, মান্দালয়সহ পাঁচটি শহরে ভবন ধসে পড়েছে। এ ছাড়া একটি সেতু ও একটি রেলসেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ইরাবতী নদীর ওপর আভা সেতু ধসে পড়েছে। সেতুটি ভেঙে পানির মধ্যে হেলে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে ‘সব দেশ’কে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মিয়ানমারের এ আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের জনগণের পাশে দাঁড়াতে এরই মধ্যে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দল কার্যক্রম শুরু করেছে।
আরও পড়ুনভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত ১৪৪, থাইল্যান্ডে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা শতাধিক মানুষ৩ ঘণ্টা আগেশহরজুড়ে ধ্বংসস্তূপ
ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিয়ানমারের মান্দালয় শহর। শহরটির এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, ‘সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে আমরা সবাই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। আমার চোখের সামনে পাঁচতলা একটি ভবন ধসে পড়ে। আমাদের শহরের সবাই এখন রাস্তার ওপর রয়েছেন। ভয়ে কেউ ভবনের ভেতরে যাচ্ছেন না।’
ইন্টারনেটে প্রকাশিত ছবিতে মান্দালয় শহরজুড়ে ধ্বংসস্তূপ দেখা গেছে। শহরের বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত। মিয়ানমারের শেষ রাজার বাসভবন ‘মান্দালয় প্রাসাদের’ দেয়ালের একাংশও ভেঙে পড়েছে। ভূমিকম্পে মিয়ানমারের আরেক শহর তাউনগোয় একটি মসজিদের একাংশ ধসে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া শান প্রদেশের আউং বান শহরে একটি হোটেল ভবনের নিচে ২০ জন চাপা পড়েছেন। নিহত হয়েছেন দুজন।
রাজধানী নেপিডোতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই শহরেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের (৯৬) মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেখানে অনেক ভবন ধসে পড়েছে। অনেক গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে আছে। ধ্বংসস্তূপের কারণে অনেক জায়গায় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির মিয়ানমার অঞ্চলের পরিচালক মোহামেদ রিয়াস বলেন, মিয়ানমারে জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়, খাবার ও চিকিৎসাসহায়তা প্রয়োজন।
আরও পড়ুনভূমিকম্পের সময় ভবনের ছাদের সুইমিংপুল থেকে গড়িয়ে পড়ল পানি১১ ঘণ্টা আগেমিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে বহু ভবন। শুক্রবার মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র শ ক রব র ত হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম
উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক