পাকিস্তানের ছেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে গড়লেন বিশ্ব রেকর্ড
Published: 29th, March 2025 GMT
অভিষেকেই ওয়ানডের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড! আজ নিউজিল্যান্ডের হয়ে মাত্র ২৪ বলে ফিফটি করে এই রেকর্ড গড়েন মুহাম্মদ আব্বাস। সেই রেকর্ডটি এসেছে কাদের বিপক্ষে? যে দেশটিতে আব্বাসের জন্ম সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে।
তাঁর বাবা আজহার আব্বাস পাকিস্তানের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও খেলেছেন এবং দেশটির হয়ে খেলার স্বপ্নও দেখেছিলেন!
আব্বাসের পরিবারের দুই প্রজন্মের স্বপ্নই একটি—ক্রিকেট। আজহার আব্বাস ক্রিকেট একটু বেশি ভালোবাসতেন বলেই তো নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমানোর পরও ক্রিকেট ছাড়েননি। খেলেছেন ওয়েলিংটন ও অকল্যান্ডের হয়েও। বর্তমানে ওয়েলিংটনে সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক এই পেসার। ক্রিকেটটা তাই এই পরিবারের জন্য একটি বেশিই বিশেষ।
উচ্ছ্বসিত, খুব খুশি, কিন্তু একই সঙ্গে অবাকও। ও ভালো খেলোয়াড়, তবে ঘরোয়া ক্রিকেট আরও অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে।মুহাম্মদ আব্বাসের বাবা আজহার আব্বাসছেলে মোহাম্মদ আব্বাসের ধ্যানজ্ঞানও এই ক্রিকেটই। সেটিও মাত্র ৩ বছর বয়স থেকে। আব্বাসের বেড়ে ওঠা অকল্যান্ডে। ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলার কথা ছিল আব্বাসের। তবে কোয়ারেন্টিন বাধ্যবাধকতায় শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় নিউজিল্যান্ড।
গত ফেব্রুয়ারিতে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ওয়েলিংটনের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করেন আব্বাস। ডাক পাওয়ার আগে সব মিলিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেছেন ১৫টি। প্রায় ৩৫ গড়ে আব্বাস রান করেছেন ৪৫৪, উইকেট পেয়েছেন ৫টি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেছেন ২১টি। ৬টি ফিফটির সঙ্গে সেঞ্চুরি আছে ২টি। গড় ৩৬.
ইএসপিএনক্রিকইনফোতে আজহার আব্বাস বলেছেন এভাবে, ‘ ও (মোহাম্মদ আব্বাস) আসলে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিল, বিষয়টি বোধগম্য। যে কোনো মানুষ এভাবে অনুভব করবে। উচ্ছ্বসিত, খুব খুশি, কিন্তু একই সঙ্গে অবাকও। ও ভালো খেলোয়াড়, তবে ঘরোয়া ক্রিকেট আরও অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। অনেক ক্রিকেটারের খেলা দেখতে ভালো লাগে। ও তাদের একজন। তাই এটি আমাদের সবার জন্যই একটি চমক ছিল।’
আরও পড়ুনআর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারের জেরে বরখাস্তই হলেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল ১ ঘণ্টা আগেনিউজিল্যান্ড ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না তাঁর প্রমাণ তো অভিষেক ম্যাচেই দেখা গেল। ইনিংসের ৪২ তম ওভারে উইকেটে আসা আব্বাস ফিফটি তুলে নেন দুই বল বাকি থাকতে। ২৪ বলে ফিফটি করা আব্বাস ইনিংসে শেষ বলে আউট হওয়ার আগে করেন ২৬ বলে ৫২। আব্বাসের আগে অভিষেকে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড ছিল ভারতের ক্রুনাল পান্ডিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলিক অ্যাথানেজের। দুজনেরই লেগেছিল ২৬ বল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা, স্বজনদের হামলায় যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চুলার ধোঁয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ভাই-ভাবি-ভাতিজার হামলায় আহত হয়ে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মনির হোসেন উড়শিউড়ার নন্দ দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে। মনির পেশার দিনমজুর ছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী এবং সাত ও দেড় বছর বয়সী দুটি ছেলে আছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মনিরের বড় ভাই বাবুল মিয়ার (৫৫) স্ত্রী জুবায়দা বেগম (৪৫) একটি মাটির চুলা নিয়ে মনিরের বসতঘরের দরজার সামনে রান্না বসান। মাটির চুলার ধোঁয়া বসতঘরে প্রবেশ করলে মনির আপত্তি জানান। এতে বাবুলের স্ত্রী উচ্চস্বরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মনির প্রতিবাদ করলে বাবুল মিয়ার ছেলে শাওন মিয়া (১৫) এগিয়ে এসে চাচা মনিরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শাওন দা নিয়ে মনিরকে মারতে এগিয়ে এলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় বড় ভাই বাবুল, সাচ্চু, সাচ্চুর স্ত্রী হালিমা বেগম (৪৩) ও ছেলে ইমন (২৬) এবং শাওন লাঠি ও কাঠ দিয়ে মনিরকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইট দিয়ে মনিরের মাথায় আঘাত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন মনিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে শহরের বেসরকারি সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মনিরের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সাতটার দিকে ইসিজি পরীক্ষায় কোনো স্পন্দন না পাওয়ায় ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করি।’
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী জুলেখা বেগম বলেন, ‘বসতঘরের সামনে মাটির চুলা এনে রান্না শুরু করেন বাবুল ভাইয়ের স্ত্রী। তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বকবক করছিলেন। আমার স্বামী পাল্টা কথা বলেন। এতে ভাতিজা শাওন দা নিয়ে স্বামীকে মারতে এগিয়ে আসে। স্বামীর বড় ভাই বাবুল ছেলেরে বলেছে, “ওরে ধর বেশি করে বাইরা।” তখন বাকিরা লাঠি, কাঠ ও ইট দিয়ে মারধর করে। শাওন আগেও স্বামীকে মারতে এসেছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাটির চুলার ধোঁয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে ঝগড়ার উৎপত্তি। নিরীহ ছেলেটাকে একা পেয়ে তারা সবাই মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বাবুল মিয়াসহ অন্যদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে সদর থানা-পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম রকীব উর রাজা ওই বেসরকারি হাসপাতালে যান। সদর থানার কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।