সেনাবাহিনী নিয়ে নেতিবাচক চর্চা বিপজ্জনক
Published: 29th, March 2025 GMT
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিশেষত সামাজিক মাধ্যমে যে নেতিবাচক চর্চা হয়েছে, তা সচেতন কোনো মানুষেরই নজর এড়ায়নি। যে উদ্দেশ্যেই তা করা হোক, এটি যে বিশেষত দেশ ও জাতির জন্য বিপজ্জনক– তা সচেতন ব্যক্তিমাত্রেরই না বোঝার কোনো কারণ নেই। তাই এ লেখার অবতারণা।
বিষয়টির সূত্রপাত ঘটান সদ্যঘটিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একজন শীর্ষসারির নেতা। তিনি সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁর আরেক সতীর্থসহ একটি বৈঠক করেছিলেন নিজেদেরই আগ্রহে। সেই বৈঠকের ১০ দিন পর এ নিয়ে তিনি এক ফেসবুক পোস্ট দেন, যেখানে তিনি সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে কার্যত কিছু অভিযোগ করেন, যদিও পরবর্তী সময়ে তাঁর সতীর্থ এক ফেসবুক পোস্টে ওই অভিযোগের বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেন। একই সময়ে সামাজিক মাধ্যমে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) এক নেতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ওই নেতা সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে ব্যাপক বিষোদ্গার করেন।
একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম হলো সেনাবাহিনী। তাকে সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবেও মনে করা হয়। তাই সচেতন মহল সাধারণত সেনাবাহিনী সম্পর্কে যে কোনো আলোচনাকে স্পর্শকাতর মনে করে থাকে। অন্তত সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা কোনো দেশপ্রেমিক বা সচেতন মানুষ করেন না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এ ধারণার বাইরে নয়। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে মূলধারার সংবাদমাধ্যমও এ বাহিনী সম্পর্কে যে কোনো বিতর্ক এড়িয়ে চলে।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিশেষত ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে দেশের প্রায় সব মানুষই তাকিয়ে আছে সেনাবাহিনীর দিকে। গণঅভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রধান দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাতে বাহিনীটির সোজা হয়ে দাঁড়াতে আরও অনেক সময় লাগবে। জানমাল রক্ষাসহ পুলিশের বিশাল দায়িত্ব সেনাসদস্যরা কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এখন প্রতিষ্ঠানটি যদি অকার্যকর হয়ে পড়ে তাহলে আক্ষরিক অর্থেই দেশে এক মাৎস্যন্যায় নেমে আসতে পারে। এ কারণেও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ওই বিষোদ্গার ভয়ংকর বলে বিবেচিত হচ্ছে।
বর্তমান সেনাপ্রধান অভ্যুত্থানের সময় এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বেশ ধৈর্য ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে দেশ-জাতি এবং বিশেষত গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি জনপরিসরে প্রশংসা কুড়িয়েছে বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। সেই সেনাপ্রধান ও তাঁর নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে যারা বিকৃত রুচির বক্তব্য দিয়ে চলেছেন, তারা তাদের বিকৃত মানসিকতারই পরিচয় দিচ্ছেন। অথবা অন্য কোনো অভিসন্ধিও থাকতে পারে তাদের। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে উৎসাহী লোকের তো অভাব নেই এ দেশে।
আশার বিষয় হলো, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আলোচ্য বিষোদ্গার ব্যাপক নিন্দাও পেয়ে চলেছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমেই এর বিরুদ্ধে সমালোচনামুখর হয়ে উঠেছেন। দেশের অর্থনীতি যে গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছে এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেভাবে নানা কারণে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন, তার মধ্যে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা হলে, তার ফল ভয়াবহ হতে বাধ্য। জাতীয় স্বার্থেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা উচিত নয়।
শেষ কথা হলো, যারা রাজনীতি করেন তাদের কিন্তু অনেক ধৈর্যশীল ও বিচক্ষণ হতে হয়। সৌজন্যবোধ তাদের গুরুত্বপূর্ণ এক বৈশিষ্ট্য। তদুপরি কোথায় কোন কথা বলা হলে কী ফল হতে পারে তাদের তাও জানতে হয়।
সাইফুর রহমান তপন: সহকারী সম্পাদক, সমকাল
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।