ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের পরবর্তী প্রধান হিসেবে দেশটির সাবেক নৌ কমান্ডার এলি শারভিতকে বেছে নিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে। যদিও শিন বেতের বর্তমান প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের আদেশ ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছেন, তা সত্ত্বেও সংস্থাটির নতুন প্রধান হিসেবে এলিকে বেছে নিলেন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, সাতজন যোগ্য প্রার্থীর ব্যাপকভিত্তিক সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের নৌবাহিনীর সাবেক কমান্ডার ভাইস অ্যাডমিরাল এলিকে শিন বেতের পরবর্তী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এলি ৩৬ বছর সামরিক বাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পাঁচ বছর নৌ কমান্ডার ছিলেন। এই পদে থাকাকালে তিনি ইসরায়েলের জলসীমা প্রতিরক্ষায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইরানের বিরুদ্ধে জটিল অভিযান পরিচালনা করেছেন।

শিন বেতের প্রধান রোনেন বারের বরখাস্তের বিষয়টি গত ২০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। সিদ্ধান্ত হয়, বারের দায়িত্বের শেষ দিন হবে ৮ এপ্রিল।

২০২১ সালের অক্টোবরে শিন বেতের প্রধান হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদে বারকে নিযুক্ত করা হয়েছিল। ২০ মার্চ নেওয়া সিদ্ধান্তের আগেই নেতানিয়াহু এক ভিডিও বিবৃতিতে বারকে বরখাস্ত করার বিষয়ে তাঁর ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছিলেন। তখন তিনি বারের সঙ্গে তাঁর চলমান অবিশ্বাসের কথা উল্লেখ করেছিলেন।

আরও পড়ুনইসরায়েলের নিরাপত্তাপ্রধানকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু২১ মার্চ ২০২৫

তবে বারকে বরখাস্তের বিষয়ে নেতানিয়াহু সরকারের আদেশ আটকে দেন ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট। ইসরায়েলের বিরোধী রাজনীতিকসহ কয়েকটি গোষ্ঠী বারকে বরখাস্তের সরকারি আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে পিটিশন দায়ের করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট বারকে বরখাস্তের সরকারি আদেশের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালত বলেছেন, আগামী ৮ এপ্রিলের আগে আপিল উপস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।

২১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের পর ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারা বলেছিলেন, নেতানিয়াহু এখন শিন বেতের নতুন প্রধান নিয়োগ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনইসরায়েলের নিরাপত্তাপ্রধানকে বরখাস্তের আদেশ আটকে দিলেন সুপ্রিম কোর্ট ২২ মার্চ ২০২৫

কিন্তু নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান কে হবেন, সেই সিদ্ধান্ত তাঁর সরকার নেবে।

নেতানিয়াহু সরকার ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা আঁচ করতে ব্যর্থতার দায় বারের ওপর চাপায়। মূলত এর পর থেকেই বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন‘নেতানিয়াহু ইসরায়েলের বড় শত্রু’: ইসরায়েলে টানা তৃতীয় দিন ব্যাপক বিক্ষোভ২৩ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ন বরখ স ত র কম ন ড র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে