নীলফামারীর জলঢাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন। তবে দুপুর ৩টা পর্যন্ত কোথাও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জলঢাকায় এই সময়ের মধ্যে সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশীয় কোনো অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যে কোনো ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ বা অধিক সংখ্যক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা, সভা সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয়তাবাদী শক্তির ব্যানারে ঈদের দিন বিকেল থেকে পাঁচ দিনের ঈদ আনন্দমেলার আয়োজন করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ও তার সহযোগীরা।

মেলা আয়োজকদের অভিযোগ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের নেতৃত্বে মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আলমগীর হোসেন ও জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু সাঈদ শাকিলসহ মেলা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের ওপর হামলা ও মেলায় ভাঙচুর চালানো হয়। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় থানার মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় মেলা আয়োজক কমিটি।

অপরদিকে জাতীয়তাবাদী শক্তি নাম ব্যবহার করে মেলার নামে চাঁদাবাজি ও অপকর্মের প্রতিবাদে একই সময়ে থানা মোড় সংলগ্ন সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা ও পৌর বিএনপি। উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আহ্বানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে শহরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল সোমবার রাতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।

বিষয়টি নিয়ে উভয়ে পক্ষই গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এ কারণে তাদের কোনো মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে জলঢাকা পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সাঈদ চৌধুরী জানান, জলঢাকা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আলমগীর হোসেন ও তার অনুসারীরা জাতীয়তাবাদী শক্তির ব্যানারে জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পাঁচ দিনের ঈদ আনন্দ মেলার আয়োজন করেন। যা দলের উপজেলা ও জেলার নেতাদেরকে অবহিত না করেই করেছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। 

জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ব এনপ র ১৪৪ ধ র সরক র সদস য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি

খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। 

এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আরো পড়ুন:

কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল

জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত

লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, ‍“২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।” 

“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি