ছবি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে নিহত ২
Published: 2nd, April 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে মো. কাইয়ুম (২২) ও মো. তারেক মিয়া (২৫) নামের দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার মোগড়া রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় আরো একজন গুরুতর আহত হন।
নিহতরা হলেন, কুমিল্লা দেবিদ্দার বাইরা ভাহুরা এলাকার আব্দুর করিম মিয়ার ছেলে কাইয়ুম মিয়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা উপজেলার পুরকুইল গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে মো.
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আখাউড়া রেলওয়ে থানার এসআই শোভন নাথ জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোগড়া রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে ট্রেনের ছাদে থাকা কয়েকজন যুবক ছবি তোলার জন্য উঠে দাঁড়ায়।
এসময় রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়া ডিস লাইনের তার পেঁচিয়ে তারা ট্রেন থেকে পড়ে যান। এতে ঘটনাস্থলে কাইয়ুম নিহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নেওয়ার পথে মো. তারেক মিয়ার মৃত্যু হয়। আহত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ট্রেনের ছাদের উপর কয়েকজন যুবক মোবাইলে ছবি অথবা ভিডিও করছিল এমন অবস্থায় ট্রেনের উপরে থাকা ডিস লাইনের তারে লেগে ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ঘটনাস্থলেই এক যুবকের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়া অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়। মূমুর্ষ অবস্থায় আরেকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।”
ঢাকা/রুবেল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য র লওয়
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস