বন্ধুদের সঙ্গে মেঘনায় নেমে নিখোঁজ, দ্বিতীয় দিনের অভিযানে ডুবুরি
Published: 3rd, April 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে নদীতে গোসল করতে নেমে ফারুক হোসেন (২০) নামে এক তরুণ নিখোঁজ হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দ্বিতীয় দিনের মতো তার সন্ধানে অভিযান শুরু করেছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের তেতৈতলা এলাকায় মেঘনা নদীতে গোসলে নেমে ফারুক নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজ ফারুক হোসেন নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকার আতিক হোসেনের ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিখোঁজ তরুণের বন্ধু জহিরুল ইসলাম বলেন, “বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে আমরা সানারপাড় থেকে ২২ জন তেতৈতলা এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে বনভোজনে আসি। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিখোঁজ ফারুক ও আমিসহ ৬ জন গোসল করার জন্য পানিতে নামি। আমরা পাঁচজন গোসল করে উপরে উঠে যাওয়ার সময় ফারুক আরো কিছুক্ষণ পানিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করে। পানিতে ডুব দিয়ে সে দীর্ঘক্ষণেও উপরে না উঠলে বিষয়টি আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। তার হদিস না পাওয়া গেলে পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়।”
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাতের অন্ধকার নেমে এলে অভিযান বন্ধ রেখে আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো তার সন্ধানে অভিযান শুরু করে।
বিষয়টি সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি আবুল খায়ের বলেন, “খবর পেয়ে বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।”
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “এরকম একটি খবর আমি পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি নৌ পুলিশকে জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/রতন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।