রাশিয়ায় গিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরির স্বপ্নপূরণ, যুদ্ধের ময়দানে গেল প্রাণ
Published: 3rd, April 2025 GMT
বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করবে। বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ইয়াসিন মিয়া শেখ (২২)। পরে ১৫ লাখ টাকা খরচ করে রাশিয়ায় একটি কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। কয়েক মাস পর চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ও ভিডিও নিয়মিত নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করতেন। কিন্তু ঈদের পরদিন গত মঙ্গলবার যুদ্ধ চলাকালে মিসাইল হামলায় তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েছে পরিবার।
ইয়াসিন মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালি গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তার শেখের ছেলে তিনি। গত ২৭ মার্চ ইয়াসিন নিহত হলেও স্বজনেরা জানতে পারেন ঈদের পরদিন মঙ্গলবার। রাশিয়ায় থাকা ইয়াসিনের বন্ধু মেহেদী হাসান মুঠোফোনে ইয়াসিনের বড় ভাই রুহুল আমিনকে মৃত্যুর খবর দেন। ইয়াসিনের মৃত্যুর খরব পাওয়ার পর থেকে পরিবারে মাতম চলছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইয়াসিনের বাড়িতে গেলে স্বজনেরা জানান, ইয়াসিনের বাবা মারা গেছেন ২০১৬ সালে। বড় ভাই তাঁর পড়াশোনা ও বিদেশযাত্রার খরচ দিয়েছেন। ৪০ শতক জমি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে গত বছরের ২২ আগস্ট রাশিয়ায় যান ইয়াসিন। সেখানে রাশিয়ার একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে যান। পরে অনলাইনে আবেদন করে গত ২২ ডিসেম্বর চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। প্রশিক্ষণের পর ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেন।
রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ও ভিডিও নিয়মিত নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করতে ইয়াসিন মিয়া। গত ১ মার্চ ফেসবুকে বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি ভিডিও আপলোড করেন ইয়াসিন। ভিডিওতে রাশিয়ায় যাওয়া, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া ও তাঁর স্বপ্নপূরণ নিয়ে কথা বলেন তিনি।
ভিডিওতে ইয়াসিন উল্লেখ করেন, গত বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়ার একটি কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন করেন। পরে অফার লেটার পেয়ে রাশিয়ায় চলে যান রাশিয়া। মস্কো থেকে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার দূরের ওই কোম্পানিতে তিন মাস চাকরির পর অনলাইনে আবেদন করে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। দেশে না হলেও বিদেশে সৈনিক হয়ে বাবার স্বপ্নপূরণ হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পোশাকে ইয়াসিন মিয়া.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের
চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য সম্প্রতি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের একটি গাড়ি ডেকেছিলেন মাইকেল। গাড়িটি আসার পর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে যেতেই বাধল বিপত্তি। ‘অতিরিক্ত মোটা’ হওয়ায় চালক তাঁকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের জনপ্রিয় স্ট্রিমার মাইকেল। ওই প্ল্যাটফর্মে তাঁর ৬০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি তাঁর কল অব ডিউটি গেমপ্লের জন্য পরিচিত।
মাইকেল সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওর শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মজা করছি না। আমার উবার চালক বলেছেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। তাই তাঁর গাড়িতে আমাকে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি তিনি আমার দিকে বন্দুক তাক করার হুমকিও দিয়েছেন।’ মাইকেলের ওই ভিডিও পাঁচ কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মাইকেল উবারের গাড়িচালককে বলছেন, ‘আপনি এইমাত্র বললেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। আমি কিন্তু আপনার ভিডিও করছি।’ উত্তরে উবার চালক নারী বলেন, ‘এটা যুক্তি আর বাস্তবতার ব্যাপার। আর আমি এটা বলার অধিকার রাখি।’ কিন্তু বাক্যটি শেষ করার আগেই মাইকেল তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘না, আপনি এটা বলতে পারেন না।’ তখন ওই নারী হাত উঁচিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি পারি। এটা আমার গাড়ি। আপনি এখান থেকে চলে যান।’
বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই উবার চালক বলেন, ‘আপনি কি চান, আমি আমার বন্দুকটা বের করি?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাইকেল গাড়ির দরজা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। এক্সে দেওয়া অন্য একটি পোস্টে মাইকেল বলেন, এ ঘটনার কারণে তিনি সেদিন চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি।
উবারের নীতি অনুযায়ী, চালকেরা বৈধ কারণ ছাড়া কোনো যাত্রীকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন না। ওজন, লিঙ্গ, বর্ণ কিংবা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো যাত্রীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর উবার চালকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে।