হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হতে পারে যে ৫ কারণে
Published: 3rd, April 2025 GMT
তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদানের পাশাপাশি সহজে কথা বলা ও ভিডিও কল করার সুযোগ থাকায় নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন অনেকেই। আর তাই ব্যবহারকারীদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতিকর ও ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করে সেগুলো সাময়িক বা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ। যে পাঁচ কারণে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হতে পারে, সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।
অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে গ্রুপে যুক্ত করাহোয়াটসঅ্যাপের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে গ্রুপে যুক্ত করার আগে তাঁর অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে অনেক সময় ব্যবহারকারীরা না জেনেই পরিচিত ব্যক্তিদের পাশাপাশি অপরিচিত ব্যক্তিদের বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত করেন, এতে তাঁদের গোপনীয়তা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিরক্তও হন কেউ কেউ। সম্মতি ছাড়া গ্রুপে যুক্ত করার বিষয়ে কোনো ব্যক্তি যদি অভিযোগ করেন তবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট সাময়িক বা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হওয়ার ৫ লক্ষণ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪স্প্যাম বা অযাচিত বার্তা পাঠানোহোয়াটসঅ্যাপে স্প্যাম বা অযাচিত বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে। আর তাই ব্যবহারকারীদের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে অনেক ব্যক্তিকে একই বার্তা পাঠানোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। স্প্যাম বার্তা পাঠানো হলে তা মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ। শুধু তা–ই নয়, স্প্যাম বা অযাচিত বার্তা পাওয়ার বিষয়ে কোনো ব্যক্তি যদি অভিযোগ করেন তবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট সাময়িক বা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ।
অননুমোদিত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপ ব্যবহারঅনেকে হোয়াটসঅ্যাপের পরিবর্তিত বা অননুমোদিত সংস্করণ ব্যবহার করেন, যা প্ল্যাটফর্মটির নীতিমালার পরিপন্থী। এসব অ্যাপের নিরাপত্তা দুর্বল হওয়ায় ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব অ্যাপ ব্যবহার করলে অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে বার্তা ও ছবি নিরাপদ রাখতে ব্যবহার করতে হবে এই ৫ সুবিধা১১ মার্চ ২০২৫অতিরিক্ত বার্তা ফরোয়ার্ডসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এ যুগে গুজব বা মিথ্যা তথ্য খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও গুজব ছড়ায়। কিন্তু অনেকে যাচাই না করেই অন্যদের পাঠানো মিথ্যা বার্তা বা ছবি ফরওয়ার্ড করেন। আর তাই একই বার্তা একাধিকবার ফরোয়ার্ড করলে অ্যাকাউন্ট সাময়িক বা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ।
নীতিমালা লঙ্ঘনহোয়াটসঅ্যাপের নীতিমালা বেশ কঠোর। এই নীতিমালা ভঙ্গ করে কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, অবৈধ কার্যক্রম, হুমকি দেওয়া বা আপত্তিকর কনটেন্ট শেয়ার করলে অ্যাকাউন্ট সাময়িক বা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ।
সূত্র: নিউজ ১৮
আরও পড়ুনআপনার অগোচরে কেউ কি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা দেখছে২৪ জুলাই ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প টসঅ য প অ য ব যবহ র কর ন ষ দ ধ কর টসঅ য প র য ক ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।
হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে
আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।
এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।
হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।
ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন
সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’
এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টদেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।
ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।
আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।
‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’
আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে