Samakal:
2025-05-01@00:43:00 GMT

সব মার্কিন পণ্যে চীনের শুল্ক

Published: 5th, April 2025 GMT

সব মার্কিন পণ্যে চীনের শুল্ক

বিশ্বের দুই বড় অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ এখন প্রকট ও দৃশ্যমান। দুই দেশই একে অপরের ওপর পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা নিচ্ছে। গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়ে আদাজল খেয়ে বাণিজ্যযুদ্ধে নামেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের পণ্যে প্রকারভেদে তিনি বিভিন্ন মাত্রার শুল্ক আরোপ করেন। এবার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কঠোর হচ্ছে চীন। তারা মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। 

চীন ছাড়াও ট্রাম্প মিত্র কানাডা, মেক্সিকো ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের প্রতিও একই আচরণ করছেন। তিনি জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান ও কানাডা থেকে আসা গাড়ির ওপর বড় শুল্ক আরোপ করেছেন। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেও মার্কিন ভোক্তাদের ওপর পড়ছে এর নেতিবাচক প্রভাব। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হয়েও ওই দেশগুলো কঠোর হতে বাধ্য হচ্ছে।

রয়টার্স জানায়, সামারিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টার্বিয়াম, ডিসপ্রোজিয়াম, লুটেনিয়াম, স্ক্যান্ডিয়াম, ইট্রিয়ামসহ মাঝারি ও ভারী ‘বিরল খনিজ’ রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আনার ঘোষণাও দিয়েছে বেইজিং। গত বুধবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন শুল্ক ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তিনি এটাকে ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ বা পাল্টা শুল্ক বলে বর্ণনা করে আসছেন। এর জেরে গতকাল শুক্রবার চীন মার্কিন পণ্যে নতুন করে ৩৪ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দেয়। চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, আগামী ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে নতুন এ শুল্ক। শুল্ক আরোপের পাশাপাশি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডাও চলছে। গত বৃহস্পতিবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের নতুন শুল্ককে ‘একতরফা উৎপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়। প্রত্যাহার না করলে পাল্টা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দেয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান বেইজিং যেন সামাজিক মাধ্যম টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দেয়। টিকটক বিক্রির অনুমোদন দিলে শুল্ক নিয়ে সমঝোতার ইঙ্গিতও দেন ট্রাম্প। বেইজিং এতে রাজি হয়নি। 

চীন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ১৬টি মার্কিন কোম্পানির কাছে রপ্তানির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ছয়টি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানির চীনে পণ্য রপ্তানি স্থগিত করেছে। মার্কিন ড্রোন নির্মাতা স্কাইডিওসহ যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১১ কোম্পানিকে ‘অবিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে’র তালিকায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ওয়াশিংটনে দুষ্প্রাপ্য খনিজ রপ্তানির ক্ষেত্রেও আরও বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে বেইজিং।

প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের পাশাপাশি ট্রাম্পের শাঁখের করাত কাটছে তাঁর মিত্রদেরও। তারা ক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে পরিকল্পিত বিনিয়োগ স্থগিত করতে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের শিল্প প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মাখোঁ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে ধোঁয়াশা না কাটা পর্যন্ত অপেক্ষমাণ কিংবা সম্প্রতি ঘোষিত বিনিয়োগগুলো স্থগিত করা উচিত। ফরাসি শিপিং প্রতিষ্ঠান সিএমএ সিজিএম যুক্তরাষ্ট্রে শিপিং লজিস্টিকস প্রদান ও টার্মিনাল নির্মাণে ২ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট এ মন্তব্য করলেন। 

আবারও পতনের মুখে শেয়ারবাজার

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন দেখা দেয়। মার্কিন শেয়ারবাজারের মোট দরপতনের পরিমাণ আড়াই ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। নাইকি, অ্যাপল ও টার্গেটের মতো বড় কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শেয়ারমূল্যে ইতোমধ্যে ৯ শতাংশের বেশি দর পতন দেখেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প পদক ষ প ন

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ