সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মহাসড়কের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন এক ভ্যানচালক। এ সময় সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ভ্যানচালকের এ অবস্থা দেখে তিনি নিজের গাড়িতে করে তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আজ শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।

ভ্যানচালক মো. মানিক মিয়া (৪০) কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার জগদল গ্রামের বাসিন্দা। ভ্যানগাড়ি নিয়ে তিনি ভাঙারি জিনিসপত্র কিনতেন। আজ সকালে হোসেনপুর-গফরগাঁও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাঁচবাগ ইউনিয়নের খোরশিদ মহল সেতুর কাছাকাছি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মানিক মিয়া।

সকাল পৌনে ৯টার দিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমীর স্নান পরিদর্শনে খোরশিদ মহল সেতু এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে যাচ্ছিলেন ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। এ সময় তিনি দেখতে পান, বিপরীত লেনে একটি ভ্যান উল্টে আছে, অচেতন ভ্যানচালককে শুশ্রূষার চেষ্টা করছেন কয়েকজন। যানবাহন না পাওয়ায় ভ্যানচালককে হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছিল না। পরে সেখান থেকে নিজের গাড়িতে করে ভ্যানচালককে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন ইউএনও। হাসপাতালে নেওয়ার পর ভ্যানচালকের মাথায় পাঁচটি ও ঠোঁটে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়। ভ্যানচালকের মুঠোফোন নম্বর থেকে পরিবারকেও খবর দিলে তাঁরা হাসপাতালে যান। পরে পরিবারের কাছে ভ্যানচালককে হস্তান্তর করেন ইউএনও।

পুরো ঘটনা তুলে ধরে আজ দুপুরে গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে। ইউএনওর এমন মানবিক কাজের প্রশংসা করছেন অনেকে। মন্তব্যের ঘরে মাহমুদা সুলতানা নামে এক নারী লিখেছেন, ‘অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করার মাঝেই থাকে অনেক শান্তি। আপনাকে (ইউএনও) অনেক ধন্যবাদ।’ হাবিবুর রহমান একজন লেখেন, ‘স্যার, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে যে মানবিক দায়িত্ব পালন করলেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। মহৎ কাজের জন্য শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’

গফরগাঁওয়ের ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, আহত ব্যক্তি মনে করতে পারছেন না। মাথায় আঘাত পাওয়ায় তাঁকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মানবিকতার ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ একজন মানুষের জন্য কাজ করতে পারায় তিনি শান্তি পাচ্ছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ইউএনও উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও