গাজীপুরে অবশেষে মঞ্চস্থ হচ্ছে ‘আপন দুলাল’
Published: 5th, April 2025 GMT
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘আপন দুলাল’ নাটক একই মাঠে মঞ্চস্থের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সকালে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামান্না তাসনীম।
এর আগে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.
ইউএনও বলেন, “নাটকের আয়োজকেরা আমাকে কনফার্ম করেছেন আজ (শনিবার) বেলা ১১টায় একই মাঠে তারা নাটকটি মঞ্চায়ন করবেন।”
গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান সাংবাদিকদের বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের এসি ল্যান্ড গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে বসেছিলেন। সেখানে কাপাসিয়া থানার ওসি, বিএনপির নেতৃবৃন্দ, মুসল্লিদের প্রতিনিধি, নাটকের আয়োজক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে নাটকটি একই মাঠে মঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে আজ নাটক মঞ্চায়ন হবে।”
কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নুরুল আমীন বলেন, “আয়োজনকারীরা নাটকটি মঞ্চস্থ করবে। তারা যদি নাটকটি করে, তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। অশ্লীল কোনো ছবি প্রদর্শন যেন না করতে পারে, সে বিষয়ে আমরা সজাগ থাকব।”
জানা গেছে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রানীগঞ্জ উদয়ন সংঘ মাঠে গত বৃহস্পতিবার সকালে ‘আপন দুলাল’ নামের নাটকটি মঞ্চায়িত হওয়ার কথা ছিল। ৫২ বছর ধরে স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মীদের আয়োজনে নাটক, গীতিনাট্য, পালাগানের মঞ্চায়ন হয়ে আসছিল। এটি ছিল ৫২তম আসর। স্থানীয় একটি পক্ষের আপত্তির কারণে নাটকের মঞ্চায়ন বাতিল হয়ে যায়। আর এ নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি “গাজীপুরে মুসল্লিদের বাধার মুখে বাতিল হলো ‘আপন দুলাল’ মঞ্চায়ন” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। এছাড়াও দেশের অন্যান্য গণমাধ্যম বিষয়টি গুরুত্বের সাথে প্রচার করে। তবে পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, নাটকের মঞ্চায়ন বাতিল ধর্মীয় কারণে নয়, রাজনৈতিক কারণে ছিল।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, “মূলতঃ আয়োজক কমিটির এক সদস্য দূর্গাপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা। তার সঙ্গে উপজেলা বিএনপির এক নেতার মধ্যে বিরোধের জেরে ওই নাটক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। অন্য কারণে তা বন্ধ হয়নি। কিন্তু পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় প্রশাসন ও আয়োজক নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে নিয়ে সমঝোতার পর নাটকটি শনিবার বেলা ১১টা থেকে একই স্থানেই মঞ্চস্থ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
ঢাকা/রফিক/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন দ ল ল ন টক র ন টকট উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।