Samakal:
2025-11-03@02:05:39 GMT

ভাড়া করা লোকে সরকারি সেবা

Published: 8th, April 2025 GMT

ভাড়া করা লোকে সরকারি সেবা

সরকারি কর্মচারী না হয়েও দিনাজপুর সদর উপজেলার শশরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নিয়মিত কাজ করছেন স্বপন রায়। সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি অর্থ নিয়ে সেবা দিচ্ছেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সেবাপ্রার্থীরা।
শশরা ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর ও নামজারি রিপোর্ট দেওয়াসহ যাবতীয় কাজ করার কথা তহশিলদার আবুল কাশেমের। কম্পিউটারে অদক্ষ হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে তিনি কার্যালয়ে স্বপন রায় নামে একজন কম্পিউটার অপারেটর রেখেছেন। স্বপন সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায় করছেন।
সরেজমিন শশরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করছেন স্বপন রায়। বারান্দায় থাকা ঝাড়ুদার সাগর কেউ এলে কী সমস্যা তা জেনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন তাঁর কাছে। খাজনা আদায়, নামজারি রিপোর্টসহ সব কাজ করে দিচ্ছেন স্বপন রায়। এ সময় বসে থাকতে দেখা যায় তহশিলদার বা ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের কয়েকজন কর্মচারী জানান, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাজনার জন্য নগদ টাকা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। সেবাপ্রত্যাশীরা খাজনা অনলাইনের মাধ্যমে জমা দেবেন। ৮ দশমিক ২৫ একর পর্যন্ত মওকুফি খাজনা। এতে বছরে শতকপ্রতি সর্বোচ্চ ২০ টাকা করে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু স্বপন নামের এই ব্যক্তি সেবাপ্রত্যাশীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। অথচ তিনি কার্যালয়ের কেউ নন। তাঁর স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনো নিয়োগপত্র নেই। তাঁর বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি বা জানানোও হয়নি। 
কৃষক ফিরোজুল ইসলাম বলেন, ‘২৯ শতক জমির খাজনা দিতে আইছি। ২৪ হাজার টাকা চাইছে। টাকা দিতে পারি না, কাজও হয় নাই।’ একই এলাকার কৃষক সিরাজুল বলেন, ভূমি অফিসে গেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে ৪ হাজার টাকা চান। টাকা দেওয়ার পরও ঘোরানো হয় দিনের পর দিন। সেবা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। ৩ বিঘা জমির খাজনা দিতে হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। আমরা তো জানি না, স্বপন অফিসের কেউই না।
শশরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর আনাফ বলেন, ভূমি অফিসে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম সামলানোর কথা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে। তবে স্বাভাবিক এ কার্য ব্যবস্থাপনা অস্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে এখানে। স্বপন রায় এ অফিসের কেউ নন। অথচ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, নথি তাঁর দায়িত্বে রাখা হয়েছে। তাঁকে কে, কীভাবে নিয়োগ করলেন– খতিয়ে দেখা দরকার।
এ বিষয়ে স্বপন রায় বলেন, দুই বছর ধরে এখানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছি। কর্মকর্তারা তাদের বেতন থেকে আমাকে টাকা দেন। চুক্তিপত্র দেখতে চাইলে বলেন, ‘মৌখিক চুক্তি হয়েছে।’ সেবাপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, মানুষ ইচ্ছায় দিলে নেই। কাউকে জোর করা হয় না।
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক আজাহার আলী বলেন, আমি তিন মাস হলো যোগ দিয়েছি। এসেই স্বপন রায়কে কাজ করতে দেখছি।
তহশিলদার আবুল কাশেম বলেন, স্বপন আগে থেকেই ছিলেন। তাঁর স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী কোনো নিয়োগ নেই। নিয়োগ ছাড়া সরকারি অফিসের কম্পিউটারে বসে কেউ কাজ করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারেন না। আমি কম্পিউটার চালাতে পারি না। তাই কাজের স্বার্থে তাঁকে রাখতে হয়েছে।
সদর ইউএনও ফয়সাল রায়হান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দেওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বপন র য় অফ স র ক ক জ কর করছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ