বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় কিশোর মো. শামীম হত্যা মামলায় বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও নোয়াখালীর সাবেক এমপি মোরশেদ আলমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। 

এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক শাহীন মিয়া কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তারা বলেন, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। জামিনের প্রার্থনা করছি।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘‘হত্যা মামলা। এ আসামি ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী। হাসিনার আনুকূল্য নিয়ে ভোট চুরি করে নিজেকে এমপি ঘোষণা করেন। হাসিনা যখন এমপি, মন্ত্রীদের নিয়ে মিটিং করে আন্দোলন দমাতে নির্দেশ দেয়, তখন এ আসামি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শুধু তিনি না, সব এমপি-মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। দুই হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে, ২০ হাজার জন আহত হয়েছে।’’

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘‘মানুষের অধিকার হরণ, আয়নাঘর সৃষ্টি, ভোট হরণ, নির্বাচনের নামে তামাশা, রাতে ভোট করে বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে তৈরি করতে তারা সহযোগিতা করেছে। তাদের পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, তারা ব্যবসায়ী। আমার প্রশ্ন এরা কেন রাজনীতিতে আসবে। তাদের উদ্দেশ্য সরকারি কর ফাঁকি, শুল্ক ফাঁকি, ঋণ ফাঁকি দিয়ে নিজেদের ব্যবসা দাঁড় করানো। এসব কবে তারা ২০ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। অবৈধ অর্থ আন্দোলন দমাতে সহযোগিতা করেছে। হাসিনা, তার মন্ত্রী, এমপিরা সব পালিয়ে গেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি, এমনকি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ইমামও পালিয়ে গেছেন। তারা কেন পালিয়ে গেছেন? কারণ তারা অপরাধী। এ আসামিও আত্মগোপনে ছিল। তার জামিন নামঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’’

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘তার সাথে ৩০২ ধারা লাই করে না। তাকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আত্মগোপনে ছিলেন না। বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। হসপিটালাইজড ছিলেন।’’

শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর গুলশান-২ থেকে মোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।  

মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বারের হোটেল চিলিসের সামনে আন্দোলনে অংশ নেয় মো.

শামীম (১৩)। বিকেলে আসামিরা গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করলে শামীম আগুনে দগ্ধ হন। পরে ৬ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ৩ অক্টোবর ভিকটিমের মা জাহানারা বেগম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করে। 

মোরশেদ আলম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিরও চেয়ারম্যান। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী উপজেলার একাংশ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
  • জামিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে হাতাহাতি, স্টেনোগ্রাফার আহত
  • সাবেক ওসি হাসান আল মামুন কারাগারে 
  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর