৩০ বছর বনজঙ্গলে সাপ ধরতেন রওশন আলী, মারা গেলেন সাপের কামড়ে
Published: 11th, April 2025 GMT
৩০ বছর ধরে সাপ নিয়ে খেলা দেখাতেন, বনজঙ্গলে সাপ ধরতেন। মাঝেমধ্যে সাপে কাটা রোগীর কবিরাজিও করতেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বেদেপল্লির সাপুড়ে রওশন আলী (৫০)। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে তিনি সেই সাপের কামড়েই মারা গেছেন।
রওশন আলী কালীগঞ্জ পৌরসভার কাশিপুর বেদেপল্লির আজগার আলীর ছেলে। গত বুধবার রাতে পার্শ্ববর্তী চাঁচড়া মাঠে সাপ ধরতে গেলে একটি বিষধর সাপ তাঁর হাতে কামড় দেয়। সাপের কবিরাজি করলেও সাপে কাটার পর তিনি নিজেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে বলেন। রাতেই স্বজনেরা তাঁকে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে যশোর ২৫ শয্যা হাসপাতালে নেন। বৃহস্পতিবার ভোররাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রওশন আলী।
বেদেপল্লির আরেক সাপুড়ে হাকিম মিয়া জানান, সাপ ধরতে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নেননি রওশন আলী। যে কারণে সাপে কামড়ালেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা মনির উদ্দিন জানান, বুধবার রাতে মাঠ থেকে এক ব্যক্তি ফোন করেছিলেন সাপ ধরার জন্য। সংবাদ পেয়ে রওশন আলী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাত ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী চাঁচড়া মাঠের একটি ড্রাগন ফলের বাগানে সাপ ধরার সময় অসাবধানতার কারণে বিষধর সাপ রওশন আলীর হাতে কামড় দেয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে ওঝার কাছে নিয়ে যেতে চাইলে রওশন আলী বাড়ি চলে আসেন। পরে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখান থেকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। যশোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তিনি মারা যান।
মনির উদ্দিন আরও জানান, রওশন আলী দীর্ঘ ৩০ বছর এই সাপুড়ে পেশায় ছিলেন। তাঁর বাবা আজগার আলীও সাপ নিয়ে খেলা করেছেন। যে সাপ তাঁদের কর্মজীবনের সঙ্গী, সেই সাপের কামড়েই রওশন আলী মারা গেলেন। জানাজা শেষে বেদেপল্লির কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, ‘লোকমুখে জেনেছি, সাপের কামড়ে একজন সাপুড়ে মারা গেছেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ পল ল র স প ধরত
এছাড়াও পড়ুন:
‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শিশুসাহিত্যিক অমিত কুমার কুণ্ডুর শিশুতোষ ছড়ার বই ‘কাঁচামিঠে ফলের ছড়া’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল বইটির প্রকাশনা সংস্থা পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।
শিক্ষাবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সাহিত্যিক রফিকুর রশীদ। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক দন্ত্যস রওশন, লোকসংস্কৃতিবিদ তপন বাগচী, শিশুসাহিত্যিক সঙ্গীতা ইমাম, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে বক্তারা বইটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
নদী স্মৃতিনির্ভর সংকলন গ্রন্থ ‘আমার নদী’ প্রকাশিত
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
প্রধান অতিথির আলোচনায় রফিকুর রশীদ বলেন, “১২৪টি ফলের ওপর লেখা এই বইয়ের ছড়াগুলো কেবল পাঠকের রসাস্বাদনই করাবে না, শিশু শিক্ষামূলক এই ছড়াগুলো রসোত্তীর্ণও বটে।”
তিনি দেশের প্রকাশকদের অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন,“প্রকাশকদের বেশি বেশি এরকম প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা উচিত।”
বইটির ব্যতিক্রমী আকৃতির দিকে ইঙ্গিত করে দন্ত্যস রওশন বলেন, “পাঠক তৈরির প্রয়াসেই পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এমন ক্ষুদ্রাকৃতির ও নতুন নতুন সাইজের বইয়ের ধারণা বাজারে আনছে। এটা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।”
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, “শিক্ষার দুটো দিক রয়েছ।একটি হলো ট্রাডিশনাল, যা আমরা পড়েছি, আপনারাও পড়েন। আরেকটি হলো জাঁ জ্যাক রুশোর পদ্ধতি। তিনি বলেছে, প্রকৃতির সঙ্গে শেখা।রবীন্দ্রনাথ যা বিশ্বভারতীর মাধ্যমে করিয়ে দেখিয়েছেন।অমিত কুমার কুণ্ডুর ছড়ার বইটি সে রকমই।এর মাধ্যমে প্রকৃতির সান্নিধ্য লাভ করবে শিশুরা ও ওরা শিখবে। এরকম বই প্রকাশ করার জন্য প্রকাশকে ধন্যবাদ। আমাদের প্রকাশকদের এ ধরনের বই বেশি বেশি করতে হবে।”
কাঁচামিঠে ফলের ছড়া বইটির পাতায় পাতায় দেশি-বিদেশি বিচিত্র ফলের পরিচয়, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নান্দনিক অলংকরণে ছন্দে-ছড়ায় তুলে ধরা হয়েছে। বইটি থেকে ছড়া আবৃত্তি করে বাচিক শিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা।
অনুষ্ঠান শেষে ছিল মৌসুমী ফল দিয়ে অতিথিদের অ্যাপায়নের ব্যবস্থা।
ঢাকা/এসবি