ফতুল্লার গাবতলী এলাকায় কোলের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয়,  ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে গোটা রমজান মাস জুড়ে ধর্ষিতা ওই গৃহবধুকে ব্লাকমেইল করে একাধিকবার গণধর্ষণ করেছে।

সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল পূণরায় ধর্ষণ করলে ওই গৃহবধূ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এবং ঘটনাটি তার স্বামীকে জানায়। পরে ফতুল্লা মডেল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানান। এবং আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য সর্বাত্মাক চেষ্টা চলছে।

ধর্ষিতার স্বামী লেগুনা চালক (২৪) জানিয়েছেন, তারা বেশ কিছুদিন ধরে গাবতলী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বিগত রমজান শুরু হওয়ার আগে তার স্ত্রী (১৮) তার শিশু সন্তানকে নিয়ে ইসদাইর-গাবতলী লিংক রোড দিয়ে যাওয়ার সময় ইসদাইর বটতলা এলাকার আনোয়ারের ভাগিনা সজিব ওরফে বদনা সজিব, গাবতলী মাজার এলাকার কাসেম মিয়ার ছেলে রাকিব ওরফে মাইন, শফিক মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া নয়ন এবং নজরুল সহ অজ্ঞাত আরো দুইজন জোরপূর্বক ধরে নিয়ে তার শিশু সন্তানকে কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে। 

এ সময় ধর্ষণকারীরা ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে। এ সময় অপর এক নিরীহ ব্যক্তিকে ধরে এনে ব্ল্যাকমেইল করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা রেখে দেয় এবং বলে ওই ব্যক্তি যদি এই ঘটনা কাউকে জানায় তাহলে এই মেয়ের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে ফাঁসিয়ে দেবে। পরবর্তীতে গোটা রমজান মাস জুড়ে ওই ভিডিও ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবূধকে আরো কয়েক দফা গণধর্ষণ করে। 

সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল তাকে পূনরায় একই আসামীরা গণধর্ষন করলে ওই দিন সে তার স্বামীকে জানায় এবং স্বামী-স্ত্রী ফতুল্লা মডেল থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করে। এই ঘটনায় গোটা গাবতলী ও ইসদাইর এলাকা জুড়ে তোলপাড় চলছে। 

ধর্ষিতার স্বামী আরো জানিয়েছেন, ধর্ষণের সময় ওরা পৈচাশিকতায় মেতে উঠে এবং আমার স্ত্রীর উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। তার সারা শরীরে ধর্ষণকারীদের কামড়ের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে এলাকাবাসী জনায়, গত ৯ এপ্রিল মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে আসামী ধরার জন্য পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। ওই দিন রাত দশটায় পুলিশ গাবতলী এলাকায় অভিযানে গেলে ওই এলাকার বিএনপি নেতা আবদুল্লা পুলিশকে মিসগাইড করে।

মামলায় পরিস্কার ভাবে কাসেমের পুত্র রাকিব হাসান মাইনের নাম লিখা থাকলেও আবদুল্লা পুলিশকে স্থানীয় রিটায়ার্ড স্কুল শিক্ষক হেলাল উদ্দিন গাজীর বাড়িতে নিয়ে যায়। কারণ হেলাল মাস্টারের ছেলের নাম রাকিবুল ইসলাম। 

এ সময় আবদুল্লার সহায়তায় পুলিশ গিয়ে হেলাল মাস্টারের পরিবারকে টানা দুই ঘন্টা হেনস্তা করে বলে হেলাল মাস্টার জানান। এ সময় ওই এলাকার কুখ্যাত ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী বদনা সজিব সহ প্রকৃত অপরাধীদের ব্যাপারে ওয়ার্ড বিএনপির এই সাধারণ সম্পাদক পুলিশের কাছে সাফাই গায়।

এ সময় আবদুল্লা বলে বদনা সজিব ও তার সাঙ্গপঙ্গরা বিএনপি করে আর হেলাল মাস্টারের পরিবার আওয়ামী লীগ করে। 

এ বিষয়ে অতি উৎসাহী আবদুল্লা পুলিশের সঙ্গে হেলাল মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত যায়। এতে প্রকৃত অপরাধীরা টের পেয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হেলাল মাস্টার ও তার পরিবার কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তবে তিনি বিএনপি সমর্থক হিসাবে এলাকায় পরিচিত।

অন্যদিকে ধর্ষণকারী বদনা সজিব সহ আসামীরাও বিএনপি বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো পদে নেই। তারা নানা অপকর্ম করার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতা অধ্যাপক মনির এবং আবদুল্লার শেল্টার নিয়ে থাকে। বিষয়টি পুরো এলাকাবাসী জানে।

ওদিকে গাবতলী এলাকাবাসী আরও জানায়, বদনা সজিবের নেতৃত্বে এই সন্ত্রাসীরা ওই এলাকায় ত্রাস হিসাবে পরিচিত। বিশেষ করে ছিনতাই, চুরি এবং মাদক ব্যবসার জন্য পরিচিত এই গ্রুপ। অথচ তার পরেও সম্প্রতি ফতুল্লা থানার সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা আবদুল্লা এদেরকে শেল্টার দেয়। 

এবারের ঈদে অধ্যাপক মনিরের সাথে বদনা সজিবকে ফটো তুলে ফেসবুকে দিতে দেখা যায়। মূলত ৫ আগষ্টের পর বিএনপির এই দুই নেতার শেল্টার পেয়েই এই ভয়ংকর অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। এলাকাবাসী এই নির্মম গণ ধর্ষণের ন্যায় বিচার চায়। 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ হবধ এল ক ব স আবদ ল ল এল ক য় এল ক র র জন য র পর ব ব এনপ এ সময় গ বতল গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।

ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।

অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।

ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ