শুরু হচ্ছে মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, খুশি জেলেরা
Published: 12th, April 2025 GMT
ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য ২০১৫ সাল হতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে সরকার। ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় এ অবরোধের বিরোধিতা করে আসছিলেন জেলেরা।
প্রতিবেশী জেলেদের আগ্রাসন বন্ধে পালন করেন সময়সীমা কমিয়ে পেছানোর জন্য মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি। তাই জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবছর ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।
অবরোধের সময়সীমা কমিয়ে পুনর্বিন্যাস করায় উচ্ছ্বসিত রয়েছেন জেলেরা। তাই এ অবরোধকে স্বাগত জানিয়ে ইতোমধ্যে অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে থেকে তীরে ফিরেছেন। এছাড়া এখনো যে সকল জেলেরা গভীর সমুদ্রে রয়েছেন তারা ১৪ তারিখ সন্ধ্যার মধ্যে তীরে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন জেলেরা। তবে অবরোকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদেয় প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানো, নিষেধাজ্ঞা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে প্রণোদনা প্রদানের এবং সাগরে প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব জেলে আমির হোসেন বলেন, “২০১৫ সাল থেকে ৬৫ দিনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে সরকার। এ সময় ভারতের অবরোধ না থাকায় তারা আমাদের দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যেত। অবরোধের পর সম গভীর সমুদ্রে গিয়ে আমরা ফিরতাম খালি হাতে। আমরা শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ করে আসছি। তবে এবছর সরকার সময়সীমা এক সপ্তাহ কমিয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে মিল রেখে সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে। এতে আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি অবরোধের পর আমাদের জালে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়বে। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের যেন অবরোধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চাল দেওয়া হয়।”
লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের চল্লিশোর্ধ্ব জেলে মোসলেম মিয়া বলেন, “আমরা শুনেছি এই ৫৮ দিনে মাত্র ৭৭ কেজি করে চাল পাবো। আমার পরিবার ছয় সদস্যের। এ চাল আসলে অপ্রতুল। তাই সরকারে কাছে অনুরোধ আমাদের যেন চালের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া অনেক সময় প্রকৃত জেলেরা চাল পায় না। আমরা যারা নিবন্ধিত জেলে রয়েছি আমরা যেন চাল পাই, সে ব্যবস্থা যেন করা হয়।”
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, “জেলায় প্রায় ৮১ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে ৪৭ হাজার। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রত্যেক জেলেকে ৭৭ কেজি করে চাল প্রদান করা হবে। এছাড়া অবরোধ শতভাগ সফল করতে আমাদের প্রচারণা চলছে। অবরোধকালীন সময়ে সমুদ্রে নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ টহল পরিচালনা করবেন।”
ঢাকা/ইমরান/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ র আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্যাস সংকট
রাজধানী ঢাকার একটি ঘনবসতিপূর্ণ শনির আখড়ায় গ্যাস সংকট এখন নিয়মিত ভোগান্তির নাম। ভোর থেকে দুপুর—কখনো কখনো পুরো দিন গ্যাসের দেখা মেলে না। এর ফলে রান্না, দৈনন্দিন জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
আমরা যারা সকালবেলা অফিস, স্কুল বা কলেজে যাবার আগে তড়িঘড়ি করে রান্না সেরে বের হওয়ার চেষ্টা করি, তাদের জন্য গ্যাস না থাকা মানেই বিশৃঙ্খল একটি দিন। একদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দাম, অন্যদিকে গ্যাস না থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় রান্না করতে গিয়ে বেড়ে যাচ্ছে বাড়তি খরচ। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গৃহিণী ও কর্মজীবী নারীরা।
সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হলো, আমরা নিয়মিত মাসিক বিল পরিশোধ করেও সে অনুযায়ী সেবা পাচ্ছি না। কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দিনের পর দিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। কবে আসবে, কখন বন্ধ থাকবে—এমন কোনো সময়সূচিও জানানো হয় না। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও পাওয়া যায় না সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা সমাধানের আশ্বাস।
গ্যাস না থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার ব্যবহারে ঝুঁকছেন। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি ও অতিরিক্ত ব্যয় বহনের কারণে এটি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কোনো টেকসই সমাধান নয়। বারবার সিলিন্ডার ভরানো এবং নিয়মিত হারে খরচ চালানো এই শ্রেণির জন্য প্রায় অসম্ভব। এ অবস্থায়, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ জোরদার করে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি থাকলে তা আগেভাগে জানিয়ে সময়সূচি প্রকাশ করতে হবে, যাতে মানুষ প্রস্তুতি নিতে পারে। মাসিক বিলের বিপরীতে ন্যায্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি এলাকার জন্য সমস্যা নিরসনে হটলাইন চালু করতে হবে, যেখানে তাৎক্ষণিক অভিযোগ জানানো সম্ভব হবে।
নুসরাত অপর্ণা
শনিরআখড়া, ঢাকা