প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার প্রতারণার কৌশল। প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে প্রতারকদের ধরন-ধারণ। হালনাগাদ এক পদ্ধতিতে এখন হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং অ্যাপে পাঠানো সাধারণ একটি ছবি হয়ে উঠতে পারে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণ। সম্প্রতি ভারতের মধ্যপ্রদেশে এমনই এক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। যেখানে হোয়াটসঅ্যাপে অচেনা নম্বর থেকে একটি ছবি নামানোর পর এক ব্যক্তি তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা হারিয়েছেন।

সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এ প্রতারণায় স্টেগানোগ্রাফি নামের একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে সাধারণ ছবি ফাইলের ভেতরে লুকিয়ে রাখা হয় ক্ষতিকর সফটওয়্যার বা ম্যালওয়্যার। ব্যবহারকারী ছবিটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে সেই ম্যালওয়্যার নীরবে যন্ত্রে ইনস্টল হয়ে যায় এবং কাজ শুরু করে। এ ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড ও ওটিপির মতো সংবেদনশীল তথ্য চুরি করে নিতে সক্ষম। অনেক ক্ষেত্রে এটি যন্ত্রে দূরবর্তী প্রবেশাধিকারও চালু করে দেয়। ফলে প্রতারকেরা সরাসরি ভুক্তভোগীর ফোন বা ট্যাবলেটে ঢুকে পড়তে পারে। আবার কখনো কখনো প্রতারকেরা ব্যবহারকারীকে প্ররোচিত করতে ফোনকল বা মেসেজ পাঠিয়ে থাকে। সেখানে ছবিটি খুলে দেখতে বলেই মূলত ফাঁদে ফেলা হয়।

এ ধরনের প্রতারণা থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে প্রথমেই সতর্ক থাকতে হবে অচেনা নম্বর থেকে পাঠানো ছবি বা ফাইলের ব্যাপারে। পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে কোনো ফাইল ডাউনলোড করার ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়। হোয়াটসঅ্যাপের ‘অটো ডাউনলোড’ অপশন বন্ধ রাখা জরুরি। ফলে অজান্তে কোনো ক্ষতিকর ফাইল ডিভাইসে সংরক্ষিত হবে না। এ ছাড়া ফোন ও অ্যাপ্লিকেশন নিয়মিত হালনাগাদ রাখা উচিত। কারণ, এসব আপডেটে সাধারণত সর্বশেষ নিরাপত্তা প্যাঁচ থাকে।

বিশ্বস্ত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করাও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ডিভাইস স্ক্যান করে ম্যালওয়্যার শনাক্ত করতে ও তা প্রতিরোধে সহায়তা করে। একই সঙ্গে যেকোনো সন্দেহজনক ফোনকল বা বার্তার ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি। অপরিচিত কেউ যদি পরিচিত ব্যক্তির ছবি বা পরিচয় যাচাই করার কথা বলে কোনো ছবি খোলার অনুরোধ জানায়, সেটি প্রতারণার অংশ হতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: টসঅ য প ম য লওয ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার

দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্‌রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’

তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’

আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫

মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা

সম্পর্কিত নিবন্ধ