গফরগাঁওয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখমের প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল
Published: 13th, April 2025 GMT
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কান্দিপাড়া বাজারে অর্ধদিবস হরতাল পালন করছেন ব্যবসায়ীরা। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও পাগলা থানা কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সুজনকে কুপিয়ে জখমের প্রতিবাদে এই হরতাল ডাকা হয়েছে।
আজ রোববার ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাজারের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে বাজারের সড়কে আগুন জ্বালিয়ে এবং স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান আসাদুজ্জামানের সমর্থকেরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য ও উস্থি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কবির সরকারের সঙ্গে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আসাদুজ্জামান সুজনের দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে কান্দিপাড়া বাজারে আসকর আলী উচ্চবিদ্যালয়ের মালিকানাধীন একটি মার্কেট নিয়ে। বিদ্যালয়ের জমিতে নির্মিত ১১টি দোকান দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। সাবেক চেয়ারম্যান কবির সরকারের লোকজন মার্কেটটি দখল করেছেন বলে অভিযোগ করেন আসাদুজ্জামান।
এই বিরোধের জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ছয়জন আহত হন। ঘটনার পর এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গত শুক্রবার এ নিয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। আসাদুজ্জামানের সমর্থকেরা গতকাল শনিবার বিকেলে কান্দিপাড়া বাজারে বিক্ষোভ করেন এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। আজ সকাল থেকে শুরু হয়েছে হরতাল।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই মামলা করেছে। হরতালের বিষয়ে পুলিশ আগে থেকে অবগত ছিল না। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।