গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস
Published: 13th, April 2025 GMT
বিগত ১৬ বছর দেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দলীয় প্রভাবের পাশাপাশি বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি বলেন, “বিগত বছরের নববর্ষগুলোতে খুব স্বাভাবিকভাবেই শুধু দলীয় নয়, বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব আমরা দেখেছি। বিভিন্ন ধরনের কনসেপ্ট তৈরি করে নববর্ষগুলোতে অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হতো।”
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের নায়েক পাড়ায় অভ্যুত্থানে শহীদ সাগর ইসলামের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
নববর্ষের দিন টিএসসি-শাহবাগ মেট্রো স্টেশন ‘সাময়িক বন্ধ থাকবে’
‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম হলো ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’
সারজিস আলম বলেন, “ক্ষমতার জায়গা থেকে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া কখনোই সাসটেইনেবল (টেকসই) নয়। এটি কখনো আমরা প্রত্যাশাও করি না। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ততটুকু স্পেস বাংলাদেশের মানুষকে দিয়েছে- আমরা যা ধারণ করি, সেটাই প্রকাশ করি এবং করতে পারি। আমরা বিশ্বাস করি, আগামীতে যারাই এই দেশের দায়িত্বে থাকুক না কেন, তারা যেন কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার সাহসটুকু না করে। আমাদের প্রকৃত সংস্কৃতি ধরাণ করার জন্য তারা যেন তাদের প্রচেষ্টা রাখেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশে নতুন একটি নববর্ষ পেতে যাচ্ছি। যে সংস্কৃতিকে ধারণ করে আমাদের বাবা, দাদা, নানারা যেভাবে নববর্ষ পালন করে এসেছেন, সেগুলোই আমাদের মূল কালচার। আমরা সেগুলোকে সামনে রেখে যদি নববর্ষকে উদযাপন করি, তাহলে সেটাই আমাদের নিজেদের প্রকৃতভাবে তুলে ধরা হবে। আমরা প্রত্যাশা করব, আমাদের সংস্কৃতির ওপরে কোনো দেশের বা নির্দিষ্ট কোনো এলাকার অপসংস্কৃতি যেন চাপিয়ে না দেওয়া হয়।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চাকলাহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, শহীদ সাগরের বাবা রবিউল ইসলাম, নাগরিক পার্টির পঞ্চগড়ের সংগঠক তানবীরুল বারী নয়ন।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নববর ষ নববর ষ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’